• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
গণতন্ত্র দখলকারীদের থেকে এখন গণতন্ত্রের সবক শুনতে হয় ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ স্বীকৃতি দিতে কমিটি বাড়ছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সরকারি ক্রয় আইন পরিবর্তনের সুপারিশ শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীরা পড়বেন ব্ল্যাকলিস্টে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতের শিক্ষক পাবে প্রাথমিক স্কুল থাইল্যান্ড সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ফিরেছেন রোগীর প্রতি অবহেলা বরদাশত করব না স্কুলে থাকবে না দ্বিতীয় শিফট কোরবানির জন্য এক কোটি ৩০ লাখ গবাদিপশুর জোগান রয়েছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী চলতি বছর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা শুরু করবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড মে থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালু করবে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ও এয়ার চায়না চলতি মাসের ২৬ দিনে এলো ১৬৮ কোটি ডলার বাজেট হবে জনবান্ধব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচ সন্ত্রাসী আটক রুমায় সেনা অভিযানে দুই কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত তাপদাহে দেশে লবণ উৎপাদনে রেকর্ড ফরিদপুরের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় নেই প্রধানমন্ত্রী আজ দেশে ফিরছেন থাই ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

চোরাগোপ্তা হামলায় সরকার ফেলা যায় না

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৬৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরসিংদীর বিশাল জনসভায় বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষ জখম করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকা- আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি।

রবিবার বিকেলে নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে হামলা চালায়? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে।

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কত জ্বালা। তাহলে যদি ওদের শিক্ষা হয়, তা ছাড়া ওদের শিক্ষা হবে না। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, নেতা কোথায়? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া এখন  জেলে। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি। আর তার ছেলে তারেক জিয়া ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়েছিল জীবনে আর রাজনীতি করবে না। লন্ডন গিয়ে বসে আছে। এত টাকা পায় কোথায়? জনগণের টাকা আত্মসাৎ করেছে, গ্রেনেড হামলা করে আইভী রহমানসহ নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত, মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। আমেরিকার থেকে এফবিআইয়ের লোক এসে সাক্ষী দিয়েছে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে, সাক্ষী দিয়েছে খালেদা জিয়ার দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পালিয়ে থাকে লন্ডনে আর এখান থেকে আগুন দিতে বলে। আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তো বাংলাদেশে ফিরে আয় আমরা একটু দেখি।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখেছেন ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনিদের ওপর কীভাবে আক্রমণ করছে। হাসপাতালে, মা বাচ্চাদের নিয়ে গেছে। মনে করেছে হাসপাতালে কেউ আক্রমণ করবে না। ওই ইসরাইলিরা সেই হাসপাতালে বোমা মেরে নারী শিশু হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া চ্যালাচামু-ারা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে গর্ভবতী নারীর ওপর হামলা চালায়। তাহলে কি এরা ইসরাইলের জারজ সন্তান কি না সেটাই আমার জিজ্ঞাসা।

সমাবেশ শুরুর আগে নরসিংদীবাসীর জন্য উপহার উল্লেখ করে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব। তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতা আমার জন্য বড় কিছু নয়, দেশের মানুষের কল্যাণই বড়।’ তার সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে এবং যার বাস্তবায়নে তার সরকার পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। যা আর কখনো পিছিয়ে যাবে না।’

এ সময় তিনি পুলিশের ওপর হামলা ও পিটিয়ে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও নির্যাতন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও অগ্নিসংযোগকে তিনি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী একে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন এবং নিরীহ নারী ও শিশু হত্যার সঙ্গে তুলনা করেন।

তিনি বলেন, এই বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকা- আপনারা যুগ যুগ ধরে দেখেছেন, কীভাবে মানুষের ওপর তারা অত্যাচার করে। ২০১৩ ও ১৪ সালে করেছে নির্বাচন বানচালের জন্য। এখন আবার একই উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে  নেমেছে। লোকজন হাট-বাজার দোকানপাট, যানবাহন, ব্যক্তিগত সম্পত্তি কোনোকিছুই রেহাই পাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ করা ছাড়া তারা এই অবরোধ করে আর কি করতে পারবে? সরকার হটাবে! কীভাবে হটাবে? এই চোরাগোপ্তা হামলা করে সরকার হটানো যায় না। মানুষ সঙ্গে না থাকলে আন্দোলন হয় না। তিনি বলেন, ‘২/৪টা চোরাগোপ্তা হামলা করে আর মানুষ মেরে ওরা এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী দল আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। তাদের কথা এদেশের মানুষ শোনে না।

অনুষ্ঠানে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি, শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী-১ আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলাম হিরু (বীর প্রতীক), নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, গাজীপুরের কালীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের জহিরুল হক ভুঁইয়া মোহন, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের (নরসিংদী গাজীপুর জেলার দায়িত্ব) সংসদ সদস্য তামান্না নুসরাত বুবলি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাউসার ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লাসহ অন্যান্য নেতা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলাশে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেন। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এই সার কারখানার উদ্বোধনের পর এক সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসের সঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে সব বাধা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো অগ্নিসন্ত্রাস বা মানবসৃষ্ট সব দুর্যোগ অতিক্রম করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশবাসীকে সাহসের সঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেওয়ায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার কাছে ক্ষমতা নয়, দেশের স্বার্থই বড়। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে-এমন দীনতায় শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না।’ ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিল। ফলে আমরা ওই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাদের দেশে এসেছিলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে যখন লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন, তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমাদের পার্টি থেকে আমি এবং তখনকার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন খালেদা জিয়া ও মান্নান ভুঁইয়া। সেখানে জিমি কার্টার আসেন মার্কিন দূত হিসেবে। এবারও একই প্রস্তাব। আমি একই কথা বলেছি। বলেছি, আমাকে সার্ভে করতে হবে, আমার দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে, পঞ্চাশ বছরের রিজার্ভ থাকতে হবে, তারপর উদ্বৃত্ত গ্যাস বিক্রির কথা আমি চিন্তা করব।’

তিনি বলেন, ‘একবার চিন্তা করেন, সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে কি আজ এত চমৎকার সার কারখানা আমরা করতে পারতাম? কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার চোখের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এসে তার পিঠে হাত দিয়ে বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম, চাচা এখন চলেন। আমি বুঝতে পেরেছি কী হবে? কিন্তু আমি এটা কেয়ার করিনি। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়। আমরা সেখান থেকে চলে এসেছিলাম।

তিনি বিএনপির মানসিক দীনতার আরেকটি উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, যখন ৯৬ পরবর্তী তার সরকার জাতীয় সংসদে দেশকে বিএনপির রেখে যাওয়া খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত করার ঘোষণা করে, তখন খালেদা জিয়া ও তার সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয়, তাহলে বিদেশী সাহায্য পাওয়া যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী ঋণ সহায়তা প্রদানের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাপান ও চীনের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তাদের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটি জাপানের মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ সিসি সেভেন চায়না কনসোর্টিয়াম বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ আমাদের এই পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি ফসল হচ্ছে এই সার কারখানা। বন্ধুপ্রতিম দেশ আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। এটি অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। যেখানে পরিবেশের কোনো দূষণ হবে না। পরিবেশ দূষণকারী কার্বন ডাই অক্সাইডকেও কাজে লাগিয়ে ১০ শতাংশ বেশি ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে। এটি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি সার আমদানি হ্রাস করবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়াবে।

তিনি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, শ্রমিকসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। কারণ এটি নির্মাণে করোনাকালীন জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সার্বিক খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘দেশবাসীকে বলব এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্যের জন্য যেন কারও কাছে হাত পাততে না হয়।’ শেখ হাসিনা দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যা কিছু করেছি তা জনগণের স্বার্থে এবং কল্যাণেই করেছি। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই করেছি।’

কারখানার উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন ॥ প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার টন সার উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক কারখানাটির উদ্বোধন করেন। কর্মকর্তারা জানান, তিন দশকের পুরনো কারখানাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুন করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন এবং প্রকল্পের শুরু থেকেই বিদেশী বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবহন সুবিধার লক্ষ্যে ঘোড়াশাল রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে কারখানার সংযোগের জন্য একটি রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী সার কারখানা পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং জিপিইউএফএফ উদ্বোধনের দিনটিকে চিহ্নিত করে একটি বিশেষ সিলমোহরও প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, আনোয়ারুল আশরাফ খান এমপি ও সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

সার আমদানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে ॥ কারখানার কার্যক্রম শুরু হলে সার আমদানির ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ, দেশের মোট বার্ষিক ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় কারখানাগুলো একসঙ্গে ১৯.২৪ লাখ টন সার উৎপাদন করবে। স্থানীয় কারখানাগুলো বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ টন উৎপাদন করছে এবং বাকি বার্ষিক চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) জানায়, কারখানাটিতে ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১১০ একর জমিতে ১৫,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন হবে ২৮০০ টন।

মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার ৪,৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা দিয়েছে এবং ১০ কোটি ৯২০ লাখ টাকা জাইকা, এইচএসবিসি এবং ব্যাংক অব টোকিও মিতসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড থেকে ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছে। কারখানার দুটি বাষ্পীয় গ্যাস জেনারেটর ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এবং প্ল্যান্টটি চালানোর জন্য ২৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন। এটি বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশ দূষণকারী উপকরণ আহরণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)।

এটি দেশে ‘অত্যাধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী এবং সবুজ’ সার কারখানা যা ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে দেবে এবং কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর