• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১২:১০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সব হাসপাতালের লিফটের সেফটি পরীক্ষার নির্দেশ বস্তিবাসীর জন্য ফ্ল্যাট বানাবে সরকার অবশেষে দেশের মাটিতে নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ ‘সবাইকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে’ গেটলক সিস্টেমে যানজটমুক্ত মহাখালী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে কাজ চলছে শেষ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩৪ প্রকল্প প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় বাস্তবতার ছাপ মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত না হলে আসামিকে কনডেম সেলে নয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহবান দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর একীভূত হতে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করল বিডিবিএল নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসছে ৯ টাকা ইউনিটে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে কৃষক অ্যাপ চালু করা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করবে সরকার বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কমাবে এনবিআর খেলাপি ঋণের ১% নগদ আদায় করতে হবে দশ দিনে এলো প্রায় ১ হাজার কোটির রেমিট্যান্স ঘরে বসেই হজযাত্রীরা পাবে প্রাক-নিবন্ধন রিফান্ডের টাকা ‘বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রীয় বাজার হওয়ার সুযোগ আছে’

সরকারি প্রতিষ্ঠানে চালু হচ্ছে ইন্টার্নশিপ

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৫০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

চাকরিপ্রার্থীদের জন্য শুভবার্তা নিয়ে আসছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ক নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ (ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ) নীতিমালা, ২০২৩’।

দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চালু থাকা ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম এ নীতিমালার বাইরে থাকবে। একই সঙ্গে সামরিক, আধাসামরিকসহ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে ইন্টার্নশিপের এ সুযোগ থাকবে না। আগামীকাল বুধবার প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে এ নীতিমালা উঠতে যাচ্ছে।

নীতিমালার খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ সৃষ্টি, পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার সমন্বয় এবং সরকারি দপ্তরের কাজের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংবিধানের ১৭(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সংগতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ।’

ইন্টার্নশিপের যোগ্যতা ও বাছাই : আবেদনকারীকে ন্যূনতম স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে। আবেদন করতে হবে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের দুই বছরের মধ্যেই। এ সময় পার হয়ে গেলে এ সুযোগ থাকবে না। এক প্রার্থীর একবারই সরকারি অফিসে ইন্টার্নশিপের সুযোগ মিলবে। আবেদনকারীদের একাডেমিক পরীক্ষার মেধা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রার্থী বাছাই করা হবে। এর আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা তাদের চাহিদার কথা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে জানাবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে ইন্টার্নশিপের স্থান, সংখ্যা, সময়কাল, বিশেষ দক্ষতা, ভাতাসহ বাছাই প্রক্রিয়ার বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করতে হবে। ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিন থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটির মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করবে। ইন্টার্নরা প্রতি মাসে পাবেন নির্ধারিত ভাতা। তবে ভাতার পরিমাণ নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়নি। ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক ইন্টার্নকে প্রতি মাসে তাঁর কর্মকাল সম্পর্কে সুপারভাইজারের প্রত্যয়ন নিতে হবে। ইন্টার্নশিপ সফলভাবে যাঁরা কাজ শেষ করবেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রত্যয়ন পাবেন। তবে ইন্টার্ন করার সময় কোনো প্রত্যয়নপত্র পাবেন না। একই সঙ্গে ইন্টার্নশিপ শেষ করা কোনো প্রার্থী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী, অস্থায়ী বা অন্য কোনো চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন না। অর্থাৎ সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রচলিত পদ্ধতি আছে, তা ইন্টার্নদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।

ইন্টার্নশিপে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে তাঁর সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মৌলিক যোগ্যতা ও অন্য গুণাবলি-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র নিয়ে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অন্য কোনো কাজে নিয়োজিত  থাকলে অনাপত্তিপত্রও লাগবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের ইন্টার্ন নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে প্রয়োজন মনে করবে, তারা সেই উদ্যোগ নিতে পারবে।

ইন্টার্নশিপের মাঝখানে কেউ যদি অন্য কোথাও চাকরি পেয়ে যায়, তাহলে তিনি ইন্টার্ন শেষ না করেই চলে যেতে পারবেন। অন্যদিকে ইন্টার্নের কার্যক্রম সন্তোষজনক না হলে, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত হলে, অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে, অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, দাপ্তরিক আদেশ অমান্য করাসহ কর্তৃপক্ষ মনে করলে যে কোনো সময় ইন্টার্নশিপ বাতিল করতে পারবে।

ইন্টার্নশিপ কর্তৃপক্ষ নবম গ্রেডের নিচে নয় এবং চাকরিতে বয়স অন্তত পাঁচ বছর– এমন একজন কর্মকর্তাকে ইন্টার্নদের সুপারভাইজার নিয়োগ করবে। অন্যদিকে ইন্টার্নশিপ শেষ করার সময় তাঁর ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও নীতিমালায় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে ‘অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি’ গঠন করবে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ। সেই সঙ্গে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের সুবিধার্থে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অধীনে একটি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সৃষ্টি করতেও নীতিমালায় বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন : এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও প্রশিক্ষণ অনু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শহিদউল্যাহ সমকালকে বলেন, সরকারি কাজ সম্পর্কে তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের প্রাথমিক ধারণা দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পেয়ে চাকরিপ্রার্থীরা সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারবেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন সুযোগ পশ্চিমা দেশগুলোতেও আছে। আমাদের সরকারও তরুণদের এ সুযোগ দিতে চাইছে। প্রথমদিকে হয়তো বড় আকারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে না। কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে এর পরিধি বাড়তে পারে।

এ নীতিমালার কার্যক্রম বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নীতিমালাটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের দপ্তর-সংস্থাকে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ সম্পর্কে জানাবে। সেখান থেকে পাওয়া চাহিদা অনুযায়ী আগ্রহীদের জানাতে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। আবদনের পর যোগ্যতা অনুযায়ী প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাধ্যমে এ নীতিমালা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করার সুযোগ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ কেউ। কারণ, বিভিন্ন নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক জনবল অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ইসিকে নিতে হয়। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ নীতিমালা শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

তবে এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারকের কাছে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বলতে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত। নীতিমালায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করলে নির্বাচন কমিশনও নীতিমালা প্রয়োগ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যে কোনো উদ্যোগের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। নির্বাচন সামনে রেখে এমন নীতিমালা হচ্ছে কিনা জানি না। তবে এখানে যেহেতু ইন্টার্নশিপের কথা বলা হয়েছে, আশা করি তরুণদের কর্ম-উপযোগী প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকবে।

ইন্টার্নশিপের ধারণা সিআরআইর : জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এমন একটি নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে প্রথমে ধারণাপত্র পেশ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। এরপর এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে ২০২১ সালের এপ্রিলে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রথম বৈঠক হয়। এতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সিআরআইর ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। এরপর আরেকটি বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের পক্ষ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর