• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রোগীর প্রতি অবহেলা বরদাশত করব না স্কুলে থাকবে না দ্বিতীয় শিফট কোরবানির জন্য এক কোটি ৩০ লাখ গবাদিপশুর জোগান রয়েছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী চলতি বছর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা শুরু করবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড মে থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালু করবে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ও এয়ার চায়না চলতি মাসের ২৬ দিনে এলো ১৬৮ কোটি ডলার বাজেট হবে জনবান্ধব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচ সন্ত্রাসী আটক রুমায় সেনা অভিযানে দুই কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত তাপদাহে দেশে লবণ উৎপাদনে রেকর্ড ফরিদপুরের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় নেই প্রধানমন্ত্রী আজ দেশে ফিরছেন থাই ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৫৭ দেশে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মূল সড়কে বন্ধ হচ্ছে মোটরসাইকেল: বিআরটিএ চেয়ারম্যান গবেষণার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিল ভারত আগামীকাল দেশের পথে রওনা হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহ স্বাস্থ্য বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব সরকারি সুবিধাভোগী নির্বাচনের প্রচারে নামলে প্রার্থীতা বাতিল: ইসি রাশেদা

সন্ধ্যায় নিখোঁজ ভোরে শিক্ষক দম্পতির লাশ, খোলেনি রহস্যের জট

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৬৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২

গাজীপুর মহানগরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের জয়বাংলা সড়কে প্রাইভেটকারের মধ্যে পাওয়া যায় সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়া শিক্ষক দম্পতির লাশ। বৃহস্পতিবার ভোরে তাদের লাশ পাওয়া গেলেও  রহস্যের জট খোলেনি। রহস্য উদঘাটনে জিএমপি গোয়েন্দা পুলিশ ছাড়াও মাঠে নেমেছে পিবিআই, সিআইডি, র্যাবসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট।

এদিকে শিক্ষক দম্পতির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার রাতে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। নিহত শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বড় ভাই আতিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তবে এজাহারে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে প্রত্যক্ষদর্শী, সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তে উভয়ের ফুসফুস ও কিডনিতে অভিন্ন লক্ষণ পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে লাশ দুটির ফুসফুস ও কিডনিতে জমাটবদ্ধ রক্ত পাওয়া গেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শাফি মোহাইমেন জানান, লাশ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় দুজনের ফুসফুস ও কিডনিতে প্রায় একই রকম লক্ষণ পাওয়া গেছে। তাদের ফুসফুস ও কিডনিতে জমাট রক্ত পাওয়া গেছে।

এটি সাধারণত খাবারে বিষক্রিয়ায় অথবা অন্য কোনো কারণেও হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

নিহত শিক্ষক জিয়াউর রহমানের ছেলে একেএম তৌসিফুর রহমান মিরাজসহ স্বজনরা মামলা করার জন্য শুক্রবার বিকালে গাছা থানায় যান। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে মামলাটি রেকর্ড করা হয় বলে জানা গেছে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় কর্মস্থল থেকে নিজস্ব গাড়ি যোগে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন টঙ্গী শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান মামুন (৫০) ও তার সহধর্মিণী টঙ্গী আমজাদ আলী সরকার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার জলি (৩৫)। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় গাজীপুর মহানগরীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের জয় বাংলা সড়কের বগারটেক এলাকায় রাস্তার পাশে তাদের গাড়ির সন্ধান পান স্বজনরা। পরে গাড়ির ভেতর থেকেই তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ।

টঙ্গী শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য আমাদেরকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। আজকে (শুক্রবার বিকালে) আমাদেরকে গাছা থানায় ডেকে আনা হয়েছে। এর আগে র্যাব অফিসে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ইতিপূর্বে পিবিআই পুলিশও আমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যা সত্য; আমরা তাই বলছি।

গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) নন্দলাল চৌধুরী বলেন, নিহতদ্বয়ের গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের জানাজা শেষে ময়মনসিংহের ত্রিশালে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলা করার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত স্কুল শিক্ষকের ছেলে মিরাজসহ পরিবারের সদস্যরা গাছা থানায় আসেন। রাতে মামলা হয়েছে। তাদের মৃত্যুর কোনো ক্লুও পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এরই মধ্যে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নিহত একেএম জিয়াউর রহমানের ভগিনীপতি আব্দুর রশিদ বলেন, নিহতদ্বয়ের দাফন-কাফন নিয়ে সবাই ব্যস্ত ছিল। এছাড়া সবাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, তাই মামালা করতে একটু বিলম্ব হয়েছে।

টঙ্গীর শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নুরুজ্জামান রানা বলেন, ঘটনার দিন হেডস্যার স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামানকেও সঙ্গে নিয়ে যান।  প্রধান শিক্ষক একেএম জিয়াউর রহমান ও সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। জিয়াউর স্যার গাছা থানার কামারজুড়ি এলাকায় এবং কামরুজ্জামান টঙ্গীর শিলমুনে বসবাস করেন। কামরুজ্জামান হেডস্যারকে মামাতো ভাই বলে সম্বোধন করতেন। তবে স্কুলের সব শিক্ষকের সঙ্গেই জিয়া স্যারের ভালো সম্পর্ক ছিল। কারও সঙ্গে কখনো বিরোধ বা খারাপ সম্পর্কের কথা শুনিনি।

সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্কুলের গেট দিয়ে বের হচ্ছিলাম। এ সময় হেডস্যারও বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্কুল থেকে বের হন। আমাকে পথে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে তার গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন ম্যাডামও গাড়িতে ছিলেন। হেডস্যার নিজেই গাড়ি চালান। আহসান উল্লাহ মাস্টার ওড়াল সেতু দিয়ে স্টেশন রোড হয়ে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমাকে গাড়ি থেকে টঙ্গী বিসিকের সাহারা মার্কেট নামিয়ে দেন। পরে আমি অটোরিকশাযোগে বাসায় যাই। এর পর আমার সঙ্গে তাদের আর কথা বা দেখা হয়নি।

কামরুজ্জামানের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার পলাশতলি গ্রামে। তিনি শিলমুন এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন। প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান গাছা থানার কামারজুড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতেই সপরিবারে বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার দড়িকাঁঠাল গ্রামে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ বলেন, ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর