• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
উত্তরা থেকে টঙ্গী মেট্রোরেলে হবে নতুন ৫ স্টেশন এমপিও শিক্ষকদের জন্য আসছে আচরণবিধি সরকার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে কাজ করছে: পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী কানাডা মেট্রোরেলে ভ্যাট এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত ২৫ মে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী সাগরে মাছ ধরা ৬৫ দিন বন্ধ বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিনজন নিহত বঙ্গবন্ধু ‘জুলিও কুরি’ পদক নীতিমালা মন্ত্রিসভায় উঠছে চাকরি দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাজুর বাবার দাফন সমপন্ন আশা জাগাচ্ছে বায়ুবিদ্যুৎ ডিসেম্বরে ঘুরবে ট্রেনের চাকা মূল্যস্ফীতি হ্রাসে ব্যাংক থেকে ঋণ কমাতে চায় সরকার বদলে যাবে হাওরের কৃষি বাংলাদেশে নতুন জলবায়ু স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্প চালু যুক্তরাষ্ট্রের ‘তথ্য দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে’ অস্বস্তি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড় এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা উঠে যাচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা দূর ৫০০ একর খাসজমি বরাদ্দ

শাস্তির বিধান রেখে হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪

সরকারি বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় দায়িত্ব পালনকালীন বেসরকারি হাসপাতালে বা ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসাসেবা প্রদান করলে লাখ টাকা অর্থদণ্ড; চিকিৎসার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্যতালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শিত না করা হলে এবং সেবাগ্রহীতাকে প্রদান করা না হলে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩০ দিনের কারাদণ্ড; প্রয়োজনীয় সুবিধাসংবলিত জরুরি বিভাগ না থাকলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে মালিকের ৩ মাস কারাদণ্ড আরোপযোগ্য হবে। এসব বিধান রেখে প্রণয়ন করা হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন।

২০১৪ সাল থেকে খসড়া এ আইনটি নিয়ে বহু সভা-সেমিনার হয়েছে। কিন্তু গত ১০ বছরে এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়নি। তবে এ খসড়া আইনটি নিয়ে গত কয়েক মাসে মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকটি সভা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, রোগী এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে যেভাবেই হোক স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন জাতীয় সংসদে পাস করা হবে।

খসড়া এ আইনে বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স প্রদান সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকার বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপনের লাইসেন্স প্রদান করবে; তবে শর্ত হচ্ছেÑ লাইসেন্স প্রদানে হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, রোগী প্রতি ন্যূনতম ১০০ বর্গফুট জায়গা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ, পর্যাপ্ত সংখ্যক বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকা ছাড়াও স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোনো বেসরকারি হাসপাতাল শর্ত ভাঙলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ন্যূনতম ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা ২ বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

সরকারি কর্মস্থলের বাইরে সেবা প্রদানের শর্তে বলা হয়েছে, সরকারি বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় চাকরিরত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তি নির্ধারিত অফিস সময়ে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা সহায়তা প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে পারবেন না। এ সময় ছাড়াও ছুটির দিনে কর্মস্থলের বাইরে বেসরকারি হাসপাতালে বা ব্যক্তিগত চেম্বারে

ফিস গ্রহণ করে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন হবে। শর্ত ভাঙলে সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই সঙ্গে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড আরোপযোগ্য হবে।

চিকিৎসাসেবা চার্জ বা মূল্য বা ফি নির্ধারণ : সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল প্রদত্ত সেবা, চিকিৎসকের ফি এবং রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার চার্জ পৃথকভাবে নির্ধারণ করবে। চিকিৎসকের ফি বা আদায়যোগ্য মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে এবং আদায়কৃত চার্জ বা ফির রসিদ সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতাকে প্রদান করতে হবে। শর্ত অমান্য করা হলে দায়ী ব্যক্তি অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩০ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। সরকার নির্ধারিত ফি, চার্জ বা মূল্য তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে গ্রহণ বা প্রদান করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে, ব্যক্তির ক্ষেত্রে অনাদায়ে ১ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড আরোপযোগ্য হবে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমঅ্যান্ডডিসি) স্বীকৃত বা অনুমোদিত ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি ছাড়া অন্য কোনো যোগ্যতার বিবরণ সাইনবোর্ড, নামফলক, ভিজিটিং কার্ডে বা ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ করা যাবে না উল্লেখ করে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তির ব্যবস্থাপত্র ও ভিজিটিং কার্ডে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নিবন্ধন নম্বর লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।

জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান : লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রত্যেক হাসপাতালে ন্যূনতম জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রয়োজনীয় সুবিধা সংবলিত জরুরি বিভাগ থাকতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রয়োজনীয় সুবিধা সংবলিত জরুরি বিভাগ না থাকলে ওই হাসপাতালকে অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড আরোপযোগ্য হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের হ্রাসকৃত মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান : বেসরকারি হাসপাতাল মুক্তিযোদ্ধা রোগীর সম্মানার্থে শতকরা ২ ভাগ শয্যা বিনামূল্যে সংরক্ষণ ও হ্রাসকৃত মূল্যে চিকিৎসা প্রদান করবে। এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে দরিদ্র রোগীর জন্য ৩ শতাংশ ও প্রতিবন্ধী রোগীর জন্য ১শতাংশ শয্যা বিনামূল্যে সংরক্ষণ করবে।

এ আইনের বিধান লঙ্ঘনের তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম প্রচলিত আইনে পরিচালিত হবে। শর্ত হচ্ছে, চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ আদালতে আনা হলে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ন্যূনতম তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে।

নির্ধারিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হাসপাতাল বা চিকিৎসাসেবা সহায়তা প্রতিষ্ঠানের অবহেলা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং তা আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপোসযোগ্য হবে। একইভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিকে হুমকি দেওয়া, ভয় দেখান, দায়িত্ব পালনে বাধাদান, আঘাত করাসহ যে কোনো ধরনের অনিষ্টসাধন বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পত্তির ক্ষতি, বিনষ্ট ও ধ্বংস করা বা ওই সম্পত্তি দখল অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং তা আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপোসযোগ্য হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব অতুল সরকার আমাদের সময়কে বলেন, ‘আইনটি নিয়ে আমরা বহু মিটিং করেছি, আরও কিছু বিষয় নির্ধারণ বাকি রয়েছে। সেগুলো চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে।’

সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘আমি যেমন চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করব, রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আমার দায়িত্ব। আমি চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, রোগীদেরও মন্ত্রী। দুজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার একমাত্র পন্থা হলো স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন। মন্ত্রিত্ব গ্রহণের পর আমি এ বিষয়ে ৪টি সভা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, যেভাবেই হোক স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন জাতীয় সংসদে পাস করাব।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর