• বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে করারোপ হচ্ছে না ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে বাধা নেই টেলিটক, বিটিসিএলকে লাভজনক করতে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ ভারত থেকে ২শ কোচ কেনার চুক্তি বেসরকারি কোম্পানি চালাতে পারবে ট্রেন দেশে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৭৮৪ ডলার ৫ জুন বাজেট অধিবেশন শুরু চালু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার বুদ্ধ পূর্ণিমা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করলেন বিপ্লব বড়ুয়া ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক নিত্যপণ্যের বাজার কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর উত্তরা থেকে টঙ্গী মেট্রোরেলে হবে নতুন ৫ স্টেশন এমপিও শিক্ষকদের জন্য আসছে আচরণবিধি সরকার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে কাজ করছে: পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী কানাডা মেট্রোরেলে ভ্যাট এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত ২৫ মে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী সাগরে মাছ ধরা ৬৫ দিন বন্ধ বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিনজন নিহত বঙ্গবন্ধু ‘জুলিও কুরি’ পদক নীতিমালা মন্ত্রিসভায় উঠছে

দীর্ঘ বঞ্চনার অবসানের আশা : তিস্তা ব্রিজ নির্মাণ শেষের পথে

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৪০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩

তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘ বঞ্চনার গল্প মুছে দেয়ার পালা এবার। নদীগর্ভে বিলীন হবে না তিস্তার দুপাড়। ফিরে পাওয়া জমিতে ফসল চাষ করে ভাঙা কোমরে শক্তি যোগাবার আশায় বুক বেঁধেছে নদীভাঙা মানুষ। ভাটির অঞ্চল কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার যোগাযোগ ব্যবসাবাণিজ্যেও ঘটতে যাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। উত্তরের দুই জেলায় আশীর্বাদ হয়ে ধরা দেয়া আশা জাগানিয়া তিস্তা সেতুর গল্প।

চিলমারীর কথা উঠলেই এখনো মনে নাড়া দেয় ভাওয়াইয়ার চিরচেনা অকৃত্রিম সুর। কল্পনায় চলে আসে ধুলো উড়িয়ে মেঠো পথে। চাকায় শব্দ তুলে ছুটে চলা। পণ্যবাহী গরুর গাড়ি চলার দৃশ্য। গাড়োয়ানের পথপানে চেয়ে আকুতির এ সুর উত্তরের সংস্কৃতি ও জনজীবনের প্রতিচ্ছবি। ‘যেদিন গাড়িয়াল উজান যায়। নারীর মন মোর পইরা রয় রে। ওকি গাড়িয়াল ভাই। হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারী বন্দরে।’ যোগাযোগ, অবকাঠামো, অর্থনীতিসহ দিনবদলের ধারা যারা দেখেছেন, উভয় কালের সাক্ষী হয়ে আছে তাদের চোখ, পরিমল মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, আমাদের শৈশবের প্রারম্ভ থেকে দেখেছি রাত দুইটা ও তিনটা পর্যন্ত এখানে হাট লাগতো এবং আশপাশের মানুষ এসে এখান থেকে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে তারা কেনাবেচা করত। সেগুলো আসত গাইবান্ধা থেকে। এপারে গাইবান্ধা আর ওপারে কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর।

দুই জনপদের মাঝে বিভক্তির রেখা টেনে বয়ে চলেছে তিস্তা। তারপরও ব্যবসাবাণিজ্যের প্রয়োজনে থেমে থাকেনি যোগাযোগ। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাহন ছিল গরুর গাড়ি। কালের বিবর্তনে গরুর গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের সেই ভোগান্তিকেও এবার বিদায় জানাবার পালা। নদী শাসনের ফলে জেগে উঠবে হাজারো একর ফসলি জমি। তাইতো তিস্তা সেতু শুধু সেতু হিসেবে নয় তিস্তাপাড়ে ধরা দিয়েছে আশীর্বাদ হয়ে। ২০১৪ সালে সেতুটির ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৩১টি পিলারের মধ্যে ৩০টি পিলারই দৃশ্যমান। আর ৩১টি স্প্যানের মধ্যে বসেছে ১৮টি। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সেতুর উভয়পাড়ে ২ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, ৫ কিলোমিটার নদী শাসন ও ৮৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ হবে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৭০ ভাগ। স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান, তিস্তা ব্রিজটি হওয়ায় নদী শাসন করা হয়েছে। দুপাড়ে জেগে উঠেছে ফসলি জমি। এখন আর নদীভাঙন হচ্ছে না। চর জেগে উঠায় হাজারো মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। তিস্তা সেতু নির্মাণে ৮৮৫ কোটি টাকার পুরোটাই অর্থায়ন করছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট। আর এই সেতুটি নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন লিমিটেড। আগামী বছরের ৩০ জুন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আশা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। মালেক উদ্দিন জানান, তিস্তা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে চিলমারী থেকে ঢাকার দূরত্ব দেড়শ কিমি কমে আসবে।

গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জানান, এ কাজের বর্তমান অগ্রগতি এবং এর গুণগতমান সন্তোষজনক। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের যে প্রত্যাশা সঠিক সময়ে সেই প্রত্যাশা পূরণ হবে। ছাবিউল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, গাইবান্ধা জানান, রাস্তার কাজগুলো অনেক দূর এগিয়েছে, বড় দুটি প্যাকেজের কাজ শেষ হয়েছে। আর যেটি সবচেয়ে বড় প্যাকেজ ধাপেরহাট-সাদুল্যাপুর সংযোগ সড়কের কারপেটিং কাজ চলমান। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পাঁচপীর হয়ে সদরের ল²ীপুর দিয়ে সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাটে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে কুড়িগ্রাম জেলা। এতে রাজধানীর সঙ্গে কুড়িগ্রামের দূরত্ব কমবে ১৩২ কিলোমিটার। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে বর্ষাকালে নৌপথের ঝুঁকি আর শুষ্ক মৌসুমে দুর্গম বালুচর পাড়ি দিয়ে আর যোগাযোগ করতে হবে না কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা কিংবা রাজধানীর সঙ্গে। এমনিভাবে পরিবর্তন ঘটবে এই এলাকার ব্যবসাবাণিজ্যেও।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর