• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
থাই ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৫৭ দেশে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মূল সড়কে বন্ধ হচ্ছে মোটরসাইকেল: বিআরটিএ চেয়ারম্যান গবেষণার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিল ভারত আগামীকাল দেশের পথে রওনা হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহ স্বাস্থ্য বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব সরকারি সুবিধাভোগী নির্বাচনের প্রচারে নামলে প্রার্থীতা বাতিল: ইসি রাশেদা ৯ মে থেকে হজের ফ্লাইট শুরু সবাইকে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে শেখ জামালের আজ ৭১তম জন্মদিন নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা আড়াই মাসে টিআইএনধারী বেড়েছে ২ লাখ সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে কক্সবাজার প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনতে প্রচেষ্টা আছে সরকারের: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নতুন ১১ জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে আসছে পড়াশোনার শিক্ষা চ্যানেল এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন নয়: গণপূর্তমন্ত্রী

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ দূরত্ব কমছে ৯১ কিলোমিটার

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৪০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নিরাপদ ও কম সময়ের মধ্যে যাতায়াতে ৫৪ বছর আগের পুরোনো কর্ডলাইনে ফিরছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ। এ কারণে ঢাকা-লাকসাম কর্ডলাইন (ইলেকট্রিক ট্রাকশন) প্রকল্পের সমীক্ষা নতুন করে শুরু করছে রেলওয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে দূরত্ব কমবে প্রায় ৯১ কিলোমিটার।  গত বুুধবার এ তথ্য জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাজমুল হাসান।

তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালে প্রথমবার কর্ডলাইন প্রকল্পটির উদ্যোগ নেওয়া হলেও ৫৪ বছর ধরে তা থমকে আছে। ২০০৬ সালে সর্বশেষ কর্ডলাইন প্রকল্পের সমীক্ষা হয়েছিল। এরপর আবার থেমে যায়।

তবে গত মঙ্গলবার রেল ভবনে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ১১টি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরির যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে সেখানে কর্ডলাইন প্রকল্পটি আছে। এ প্রকল্পের অধীনে কর্ডলাইন প্রকল্পটির সমীক্ষাকাজ নতুন করে শুরু হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ট্রেন চলাচলে সময়, ব্যয় ও দূরত্ব সবই কমবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ঢাকা থেকে ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া ঘুরে কুমিল্লা পর্যন্ত ট্রেন আসতে অনেক সময় লাগে। রেল ম্যাপ অনুযায়ী অনেকটা ইউ টাইপের লাইন পাড়ি দিতে হয়। এখন আমাদের নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন হয়ে গেছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে কুমিল্লা অথবা লাকসাম পর্যন্ত কর্ডলাইন করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, সমীক্ষাকাজ শেষ হলে ২০২৪ সালের জুন নাগাদ কর্ডলাইনের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে মোট ২৩৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সমীক্ষা শেষে কর্ডলাইন নির্মাণ প্রকল্প আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হলে সুফল পাবে যাত্রীরা।

২০২০ সালে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। মূলত শেষ হওয়ার বছরেই প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রেলওয়ে। গত মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান এবং যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্স গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের (জাপান) জিএম ইউজি অসানো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

রেলওয়ে পরিকল্পনা দফতরের তথ্য মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। কর্ডলাইনে মিটারগেজ ও ব্রডগেজ উভয় ট্রেন চলাচল করবে। ঢাকা-লাকসাম কর্ডলাইনটি নির্মাণ হলে বর্তমান গতিতে ট্রেন চললেও সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। কর্ডলাইনে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার গতি নিয়ে ট্রেন চলতে পারবে। এতে আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলবে।

কর্ডলাইন কী : রেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোজা কোনো রেলপথ নির্মাণ করা হলে তাকে কর্ডলাইন বলা হয়। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে লাকসাম পর্যন্ত যে ৯১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে তা সোজা হবে। এ জন্য এর নাম দেওয়া হয়েছিল কর্ডলাইন। তা নির্মাণ করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলোকে টঙ্গী, নরসিংদী, ভৈরব, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া, কুমিল্লা ও লাকসাম আসতে হবে না। তখন ঢাকা থেকে সোজা নারায়ণগঞ্জ হয়ে রেলপথে লাকসাম চলে আসতে পারবে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, ১৯৬৯ সালে যে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হয় পরবর্তী সময়ে সরকারগুলো আর তা অনুভব করেনি। তারা উচ্চাভিলাষী বুলেট ট্রেন নির্মাণের জন্য ২ লাখ কোটি টাকার বাজেট করতে পারে, কিন্তু এর চেয়ে অনেক কম খরচে ঢাকা-লাকসাম কর্ডলাইন নির্মাণ করা হলে অর্থনৈতিকভাবে তা অনেক বেশি লাভবান হতো।

কর্ডলাইনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে দূরত্ব ও সময় কমার কথা উল্লেখ করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এতে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ ও দ্রুত হবে। বাঁচবে মানুষের শ্রমঘণ্টা।

কর্ডলাইনের ইতিবৃত্ত : ১৯৬৯ সালে কর্ডলাইন নিয়ে সমীক্ষায় ৩টি বড় ও মাঝারি সেতুসহ ২৬ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৬-৭৭ সালে আবারও এর নির্মাণ নিয়ে অগ্রগতি হলে তখন বাজেট ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। ১৯৯৮-৯৯ সালে রেল পুনর্গঠন সংস্কার প্রণয়নে গঠিত কমিটি এই কর্ডলাইন নির্মাণে আবারও সুপারিশ করে এবং তখন খরচ ধরা হয় ৯০০ কোটি টাকা। ২০০৬ সালে ফের সমীক্ষা চালানো হয় এবং এই সমীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া হয় ২০০৮ সালে। সেই রিপোর্টে এর বাজেট ধরা হয় ২৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন হলো দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ। এই পথে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে রেলওয়ের। নির্মাণ হচ্ছে মাতারবাড়ী বন্দরও। সেই বন্দরের সঙ্গেও রেললাইন যুক্ত করা হচ্ছে। ফলে আগামীর যাতায়াত ব্যবস্থায় রেলপথ আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর