• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
এপ্রিলে রেমিট্যান্স এলো ১৯০ কোটি ৮০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে যাচ্ছে বাংলাদেশের হাইব্রিড ধানবীজ হজ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে : ধর্মমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন: খাদ্যমন্ত্রী ঢাকাকে পরিবেশ বান্ধব সুন্দর শহরে রূপান্তরিত করা হবে : রাজউক চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে আ. লীগকে আমন্ত্রণ বিজেপির ধান উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন বসছে আজ আইপিডিআই ফাউন্ডেশন হৃদরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে : স্পিকার যতবার সরকারে এসেছি শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি: প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রেল উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী রাশিয়া রেলপথে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে খুলনা, শুরু জুলাই থেকে এআই প্রযুক্তিতে চলবে সরকারি অফিস অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে ১২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার সুপারিশ সংশোধন করা হচ্ছে শ্রম আইন রেডিয়েশন প্রয়োগে ঘরেই সংরক্ষণ করা যাবে পেঁয়াজ চিকিৎসকরা অফিস টাইমে হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা প্রবৃদ্ধির দৌড়ে চীন মালয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

উল্লাপাড়ায় এক সুদ কারবারির মামলার ফাঁদে দিশেহারা সাধারন মানুষ

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১৪৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় এক সুদ কারবারির ঋন ও সুদের জালে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারন মানুষ। সুদ ও ঋন খেলাপিদের নামে সাদা চেক এবং ষ্ট্যাম্পে ইচ্ছেমতো টাকা বসিয়ে মামলা দিচ্ছে সেই কারবারি। মামলার ফাঁদে পড়ে দিশেহারা ও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অনেক পরিবার। ওই সুদ কারবারির নাম সাকোয়াত হোসেন। তার বাড়ি উপজেলার বিনায়েকপুর গ্রামে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ ও মামলা করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।

মামলা ও লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার বিনায়েকপুর গ্রামের সাকোয়াত হোসেন এক সময় দিন মজুরের কাজ করতেন। নিজের সম্পদ বলতে কিছুই ছিল না । এরমধ্যে তার ছেলে জাকিরুল ইসলাম পল্লী বিদ্যুতের টেকনিশিয়ান হেল্পার পদে চাকুরি পান। ছেলের অবৈধ আয়ের টাকায় সাকোয়াত নিজ এলাকায় শুরু করে উচ্চ সুদের কারবার। তিনি এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চড়া সুদে ঋনদেন।

এর বিপরীতে ঋন গ্রহীতাদের কাছ থেকে সাদা ষ্ট্যাম্প এবং চেকে স্বাক্ষর নিয়ে জমা নেন। অল্পদিনেই চড়া সুদের কারবার করে সে টাকার কুমিড় বনে গেছে। তার কাছ থেকে কেউ ঋন নিয়ে সুদ সহ ফেরত দিতে গড়িমশি করলেই নেমে আসে মামলার খড়ক। ঋন দেয়ার সময় জমা নেয়া ফাঁকা ষ্ট্যাম্প আর চেকে ইচ্ছেমতো টাকার অংক বসিয়ে তা ব্যাংকে জমা দিয়ে ডিজঅনার করান। এরপর তা দিয়ে আদালতে ঋন গ্রহীতাদের নামে দেয়া হয় মামলা। সাকোয়াতের এমন সুদের মামলায় উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অনেক মানুষ এখন সর্বশান্ত হয়ে দিশেহারা।

বিনায়েকপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান পারিবারিক সমস্যয় পড়ে সাকোয়াত হোসেনের কাছে ২ লাখ টাকা ঋন নেন। এসময় তার কাছ থেকে দুটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়। প্রতি ১ লাখ টাকায় মাসে ১০ হাজার টাকা করে দুই বছরের মতো তিনি ঋনের বিপরীতে সুদ দিয়েছেন সাকোয়াত কে।

এরপর মুল টাকা ফেরত দিতে গেলেই বাধে বিপত্তি। সুদ কারবারি সাকোয়াত তার সুদ সহ মোটা অংকের টাকা দাবী করে। তা দিতে অস্বীকার করায় আব্দুল হান্নানের দেয়া দুটি ফাঁকা চেকে ৬০ লাখ টাকা করে বসিয়ে ব্যাংকে ডিজ অনার করান সাকোয়াত। এরপর ৬০ লাখ টাকার পাওনা দাবী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য শালিষ বসানো হয়। মাতব্বররা সাকোয়াতকে দুই লাখ টাকা ফেরত এবং মামলা তুলে নেবার মিমাংশা রায় দেন। কিন্তু সাকোয়াত তা না মেনে আদালতে আব্দুল হান্নানের নামে মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, আমি গরিব ও অসহায়। সাকোয়াতের এমন জালিয়াতির কারনে এখন সর্বশান্ত। তার বিরুদ্ধে আমি প্রতারনার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। যা থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার এবং তদন্ত দাবী করি।

সুদ কারবারি সাকোয়াতের এমন চেক ও ষ্ট্যাম্প জালিয়াতির মামলায় বিপাকে পড়েছেন বাঙ্গালা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতবাড়িয়া গ্রামের সুলতান, সুজাব আলী, পাঠানপাড়া গ্রামের মজনু মিয়া, বিনায়েকপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ, আব্দুল হক, ভয়নগর গ্রামের আলমগীর হোসেন সহ অনেকেই। এদের সবার নামে পাওনা আদায়ে কোটি টাকার মামলা দায়ের করেছে সাকোয়াত। এভাবে সুদের কারবার ও মানুষকে জিম্মি করে সাকোয়াত দিন মজুর থেকে কোটিপ্রতি বনে গেছে। সেই টাকায় উল্লাপাড়া সহ বিভিন্ন স্থানে মোটা অংকের টাকায় জায়গা জমি ক্রয় করেছেন।

সাকোয়াতের মামা আব্দুল হামিদ জানান, তার ভাগ্নে নিকট আতœীয় সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে সুদের টাকা না পেয়ে একাধিক চেক জালিয়াতির মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এতে সাধারন মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সমাজে অশান্তি বিরাজ করছে। আমি সহ গ্রামবাসী এতে বাধা দিলেও সে তা মানছে না।

এ বিষয়ে সাকোয়াত হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলে তিনি পালিয়ে যান। মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে সুদকারবারি সাকোয়াত হোসেনের নামে কৃষক আব্দুল হান্নানের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার স্বাক্ষ্য প্রমান সহ তার জালিয়াতি তুলে ধরে গত ১৭ এপ্রিল আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে উল্লাপাড়া থানা পুলিশ।

সুদ কারবারে ভুক্তভোগীরা সাকোয়াতের এই জালিয়াতি বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দ্রæত তার এই অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর