• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
পতেঙ্গা সৈকত ঘিরে মাস্টার প্ল্যান তৈরিসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত কর্মপরিধি বাড়ছে জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টারের উত্তরের যোগাযোগে আসবে গতি চট্টগ্রাম বন্দরে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ হেমায়েতপুরে হবে বহুতল টার্মিনাল চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখের বেশি পশু প্রস্তুত দেশকে আরও এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল একটা জাগরণ : নানক শেখ হাসিনাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পে বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ দেশি শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনে সফলতা একক গ্রাহকের ঋণসীমা অতিক্রম না করতে নির্দেশ ব্যাংকগুলোকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ১১০ বিলিয়ন ডলার ২-৩ বছরের মধ্যে মহাকাশে যাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট প্রত্যাশা নতুন অধ্যায়ের বিপিসির এলপি গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট আধুনিকায়ন, জুনে চালু রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের সম্ভাবনা

‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ ছাড়া মিলবে না বহুতল ভবনের নকশার অনুমোদন

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৬৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩
‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ ছাড়া মিলবে না বহুতল ভবনের নকশার অনুমোদন

রাজধানী ঢাকায় প্রায়ই ঘটছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। পানির প্রাকৃতিক উত্স পুকুর, খাল ও জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে নাকাল হতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আগুনের ঘটনায় জীবন ও সম্পদের বিপুল ক্ষতি হওয়ায় টনক নড়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। নকশা অনুমোদনের জন্য এবার বহুতল ভবনের সামনে দৃশ্যমান স্থানে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বসানোর শর্ত জুড়ে দিয়েছে সংস্থাটি। এ শর্ত না মানলে কোনোক্রমেই ভবনের নকশার অনুমোদন মিলবে না। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে রাজউকের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের পাশাপাশি অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি প্রশমনে অন্যান্য যে নিরাপত্তার বিষয় আছে সেগুলোও নিশ্চিত করতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থাকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাধারণত ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে যে পানি থাকে তা আগুন নেভানোর জন্য সবসময় যথেষ্ট হয় না। তখন কাছাকাছি কোনো জলাশয় বা উত্স থেকে পানি নেয়া হয়। এক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে ব্যবহূত হয় ফায়ার হাইড্রেন্ট, যা একটি শহরের পানির সংরক্ষণাগারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। কাছাকাছি কোথাও আগুন লাগলে এ পয়েন্টে পাইপ লাগিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়। ঢাকায় বহুতল ভবন নির্মাণে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের বিষয়টি আইনে থাকলেও এতদিন রাজউকের তদারকি ছিল না। ফলে অগ্নিনিরাপত্তা প্রসঙ্গটি এক প্রকার অবহেলিত। কোথাও আগুন লাগলে তা নেভাতে গিয়ে প্রচণ্ড বেগ পোহাতে হচ্ছে পানির সংকট থাকায়। মারাত্মক আকার ধারণ করছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। তাই বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতে রাজধানীবাসীকে অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তা দিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট ছাড়া বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজউক।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আইনে বিষয়টি আগেও বলা ছিল। রাজউক ব্যাপারটি এখন কঠোরভাবে তদারক করবে সম্প্রতি আমরা এক সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফায়ার হাইড্রেন্ট ছাড়া কোনোভাবেই ভবনের নকশা অনুমোদন করা হবে না। শুধু তা-ই নয়, অনেকে চালাকি করে ভবনের পেছনে এক কোনায় ফায়ার হাইড্রেন্ট বসায়। আমরা বলছি, এ রকমটি আর চলবে না। প্রকাশ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা বরাবর এটি স্থাপন করতে হবে। এছাড়া ভবন মালিকরা ছাড়পত্র পাবেন না।’

বহুতল ভবনের ব্যাখ্যায় রাজউক বলেছে, ১০ তলার ওপরে আবাসিক কিংবা বাণিজ্যিক যেকোনো ভবনই নির্মাণ করা হোক না কেন, অবশ্যই ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করে তার নকশার অনুমোদন নিতে হবে।বিষয়টি ব্যাখ্যা করে রাজউকের নগর পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, নগরীতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে পানির লাইন পান না। তখন পার্শ্ববর্তী পুকুর বা নদী থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভাতে হয়। কিন্তু যেখানে নদী, খাল বা পানির উত্স থাকে না সেখানে আগুন লাগলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই রাজউক ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে আরো আগেই রাজউকের তদারকি জোরদারের প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) সভাপতি স্থপতি ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘ভবন মালিকরা মূলত ফায়ার সার্ভিস থেকে ফায়ার হাইড্রেন্টসহ অগ্নিনিরাপত্তার যাবতীয় ছাড়পত্র নিয়ে এসে রাজউকে দেখায়। এরপর ভবনটির নকশার ছাড়পত্র দেয় রাজউক। ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের বিষয়ে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ এ সংস্থার আগেও ছিল না, এখনো নেই।’

স্থপতি ড. সাব্বির আহমেদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুযায়ী, বহুতল ভবনে ফায়ার হাইড্রেন্ট লাগবেই। এ বিষয়ে রাজউকের আরো আগেই মনোযোগী হওয়া দরকার ছিল।এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় ভবন নির্মাণ শেষে যদি ফায়ার সার্ভিস এসে অগ্নিনিরাপত্তার যাবতীয় বিষয়গুলো দেখে যায়। আরেকটা বিষয় রাজউককে নজরদারি করতে হবে, যেখানে ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকবে সেখানে যেন কোনোভাবে গাড়ি পার্ক করা না হয়। হলুদ রঙ দিয়ে ওই স্থানটি চিহ্নিত করে দিতে হবে। এখানে শুধু ফায়ার সার্ভিসের গাড়িই পার্কিং করবে। কেননা অনেক সময় দেখা যায়, আগুন লেগেছে কিন্তু ফায়ার হাইড্রেন্টের জায়গায় অন্য একটি গাড়ি পার্ক করা রয়েছে। আগুন দেখে ওই গাড়ির চালক তো ভয়েই পালিয়েছে। তখন ফায়ার সার্ভিসকে অগ্নিনির্বাপণে ঝামেলা পোহাতে হয়।’

বহুতল ভবনের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে সড়কের নির্ধারিত স্থানেও যেন ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের বিষয়টি বাস্তবায়ন হয় তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।এ প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রাজউক অবশ্যই ভবনের অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি তদারক করবে, ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের ব্যাপারে নজরদারি করবে। কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি সরকারি উদ্যোগে রাস্তায় ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপানের বিষয়টি এখনো বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক। রাজউক এ ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে বলে আমরা আশা করছি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর