• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভুল তথ্যে প্লট কেনা ও হস্তান্তরে বরাদ্দ বাতিল ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সেনাবাহিনী’ রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনার সুপারিশ বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে যুক্ত হচ্ছে আরও ৫০০ শয্যা চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এখন দৃশ্যমান আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি ৭০ কোটি ডলার মিলবে জুনে সরকারিকরণ হলো জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর বন্দিদের সুস্থ রাখতে নানা উদ্যোগ কারাগারে জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে দ্বিতীয় ইউনিট দক্ষিণে বাড়ল কমিউটার ট্রেন যাত্রী পরিবহন শুরু আজ উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর দেখতে চাই – প্রধানমন্ত্রী র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খুলনায় লবণাক্ত জমিতে বছরজুড়েই ফলছে ফসল সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের ‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বে টার্মিনাল প্রকল্পে গতি বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বস্তিবাসীর জন্য ৯ কুলিং জোন করবে ডিএনসিসি

মধ্যপাড়ায় নতুন খনি করার চিন্তা

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৫৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩

পাথর উত্তোলন বাড়াতে চায় ‘মধ্যপাড়া কঠিন শিলা’ কর্তৃপক্ষ। পাথরের চাহিদা বাড়তে থাকায় এমন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তারা। খনি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, পাথর উত্তোলন বাড়ানো গেলে মধ্যপাড়া কঠিন শিল্প প্রকল্প একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। দেনা পরিশোধ করে বাড়ানো যাবে সরকারের রাজস্ব। তবে নতুন করে খনি তৈরির ক্ষেত্রে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ। অধিগ্রহণ করতে হবে বন বিভাগের ১৬২ একর জমি। স্থানীয়দের জমি অধিগ্রহণ করতে হবে ১০০ একরের মতো। স্থানীয় ৪৮টি পরিবারকে বসত সরাতে হবে।

শিলা কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, দেশে পাথরের যে চাহিদা রয়েছে, তার ৫ শতাংশ সরবরাহ করতে পারে দেশের একমাত্র সরকারি গ্রানাইট পাথর কোম্পানি। বাকি ৯৫ শতাংশ পাথরই ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। অথচ আমদানিকৃত পাথরের তুলনায় মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পের মান ভালো।

মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, দেশে পাথরের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। তবে মধ্যপাড়া খনির পাথরের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় আমদানি করা পাথরের চাহিদা বেশি। এ অবস্থায় খনি থেকে পাথর উত্তোলন বাড়ানো গেলে উৎপাদন খরচ একটু কমিয়ে আনা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে দাম কমবে এবং মধ্যপাড়ার পাথরের চাহিদা থাকবে সবচেয়ে বেশি।

কর্মকর্তারা জানান, মধ্যপাড়া খনি কর্তৃপক্ষ সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সেখানে তুলে ধরা হয়েছে, নতুন খনি তৈরি হলে পাথর বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়েও সরকরের অন্তত ১৩৫ কোটি ডলার আয় হবে।

মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু দাউদ মুহম্মদ ফরিদুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, গত চার বছর ধরে পাথর উত্তোলনে মুনাফায় করছে কোম্পানি। এখন নতুন করে দ্বিতীয় ফেসে পাথর উত্তোলনে প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ফেস থেকে পাথর উত্তোলন শুরু হলে কোম্পানি আরও বেশি রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা দিতে পারবে।

এদিকে গতকাল জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে মধ্যপাড়া খনি থেকে দ্বিতীয় ফেসে পাথর উত্তোলন নিয়ে একটি বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মধ্যপাড়ায় দ্বিতীয় খনি থেকে পাথর উত্তোলন করা হবে। প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই বাকি কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

এদিকে গত ১০ মার্চ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খজিনসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানি পরির্দশন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানি দীর্ঘদিন লোকসানে থাকলেও গত কয়েক মাস ধরে লাভ করছে। মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানিকে আরও লাভবান করতে বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন ফেসে পাথর উত্তোলন করতে বিনিয়োগও করা হবে।

দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র ভূগর্ভস্থ গ্রানাইট পাথরের খনি। ১৯৭৪ সালে মাটির নিচে ১২৮-১৩৬ মিটার গভীরতায় খনিটি আবিষ্কৃত হয়। মধ্যপাড়া খনির ১ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় শিলা মজুদের পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি ১৬ লাখ টন এবং উত্তোলনযোগ্য শিলার পরিমাণ ১০ কোটি ১৩ লাখ টন। ২০০৭ সাল থেকে এ খনির পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজে উন্নতমানের এ কঠিন শিলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির সঙ্গে জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) নামে একটি কোম্পানি চুক্তির মাধ্যমে বর্তমানে খনি পরিচালনা ও পাথর উত্তোলন হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মধ্যপাড়া খনির পাথরের উৎপাদন বৃদ্ধি ও গ্রানাইট স্লাব হিসেবে উত্তোলনযোগ্য কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য ২০১৭ সালে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়, যা ২০১৯ সালে সমীক্ষা প্রকল্প শেষ হয়। সেই সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ভূর্গভস্থ পদ্ধতিতে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টন পাথর উত্তোলন করা সম্ভব। যাচাইকৃত এলাকায় প্রতিদিন ১১ হাজার টন অর্থাৎ বছরে ৩৩ লাখ টন উৎপাদন ক্ষমতার নতুন একটি খনি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্ভব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে আরও বলা হয় প্রস্তাবিত নতুন খনির উন্নয়ন করতে প্রায় ছয় বছর লাগবে। তবে খনি উন্নয়ন হলে অন্তত ৩৪ বছর এ খনি থেকে পাথর উত্তোলন করা যাবে।

একটি সূত্র জানায়, নতুন খনিতে ২৪৮ মিটার ও ৩০০ মিটার গভীরতায় ২০ মিটার পুরুত্বের দুটি লেভেল থাকবে। প্রতিটি লেভেলে ২০ মিটার উচ্চতা ও ৪৩ বর্গমিটার আকারের পিলার এবং ১৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে রুম থাকবে। ব্লাস্টিং পদ্ধতিতে ১৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে রুম হতে ৮ মিটার হরিজেন্টাল হেডিং এবং ১২ মিটার ভার্টিক্যাল বেঞ্চিংয়ের মাধ্যমে পাথর উৎপাদন করা হবে। মধ্যপাড়া খনি থেকে বর্তমানে এক দশমিক ৬৩ মিলিয়ন টন পাথর উত্তোলিত হচ্ছে। অন্যদিকে বছরে প্রায় ১৮ মিলিয়ন টন পাথর বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে পাথর আমদানি করার কারণে বছরে প্রায় ৩৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে।

খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন খনি নির্মাণের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করা হলে খনিতে ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ডলার। অপরদিকে পাথর বিক্রি করে আয় হবে ৩১৪ কোটি ডলার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর