• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:১২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বাংলাদেশের রেল উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী রাশিয়া রেলপথে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে খুলনা, শুরু জুলাই থেকে এআই প্রযুক্তিতে চলবে সরকারি অফিস অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে ১২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার সুপারিশ সংশোধন করা হচ্ছে শ্রম আইন রেডিয়েশন প্রয়োগে ঘরেই সংরক্ষণ করা যাবে পেঁয়াজ চিকিৎসকরা অফিস টাইমে হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা প্রবৃদ্ধির দৌড়ে চীন মালয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির দৌড়ে চীন মালয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্র দখলকারীদের থেকে এখন গণতন্ত্রের সবক শুনতে হয় ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ স্বীকৃতি দিতে কমিটি বাড়ছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সরকারি ক্রয় আইন পরিবর্তনের সুপারিশ শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীরা পড়বেন ব্ল্যাকলিস্টে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতের শিক্ষক পাবে প্রাথমিক স্কুল থাইল্যান্ড সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ফিরেছেন রোগীর প্রতি অবহেলা বরদাশত করব না স্কুলে থাকবে না দ্বিতীয় শিফট

বিদেশি কূটনীতিকদের সতর্ক করে দিলেন তিন মন্ত্রী

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৫১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২২

‘বিদেশি হস্তক্ষেপ ও দেশীয় ষড়যন্ত্রে সাংবিধানিক চর্চা ও নির্বাচনি সংস্কৃতি থেকে ঢাকাকে বিচ্যুত করা যাবে না’ বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করলেন সরকারের তিন মন্ত্রী। মানবাধিকার ও নির্বাচন ইস্যুতে সম্প্রতি বিবৃতি দেয়া বিভিন্ন মিশন কর্তাদের উপস্থিতিতে এক সেমিনারে মন্ত্রীরা তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলার আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রোববার অনুষ্ঠিত ‘মানবাধিকা রক্ষা ও এগিয়ে নেওয়া: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্‌রিয়ার আলম। সভাপতির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। প্রধান অতিথি ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, কসোভো, মালদ্বীপ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ ঢাকায় প্রায় সব দেশের দূতাবাসের কূটনীতিকরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

‘মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলোর মধ্যে ১৫টি দেশ গত মঙ্গলবার যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে, তা সরকারের নজরে এসেছে’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্‌রিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। কোনো ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রধানমন্ত্রীকে সাংবিধানিক দায়িত্ব, গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব পালন থেকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। কেননা এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, জনগণ যা চাইবে তাই হবে। বাইরের কোনো শক্তি বা অভ্যন্তরীণ কোনো ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। সরকার এই মাটিতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় লড়াই করে যাবে।

‘পশ্চিমা দেশের অযাচিত চাপের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আশা করব, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরা শিষ্টাচার মেনে চলবেন, যেমনটি তাদের দেশগুলোতে অন্য দেশের কূটনীতিকরা মেনে চলেন।’

মূল প্রবন্ধে শাহ্‌রিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো কিছু উন্নয়নশীল রাষ্ট্র অযাচিতভাবে পশ্চিমা বিশ্বের চাপের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ যেমন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করে, তেমনি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী।

‘আর এই কারণেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, নাগরিকদের জীবনযাত্রা উন্নত করতে এবং মানবাধিকারসহ মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকার কাজ করছে। এ কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল কাতারে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সরকারকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরা শিষ্টাচার মেনে চলবেন।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল্য অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হান্নান এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির সেমিনারে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন করছে– এই তথ্য জানিয়ে মূল প্রবন্ধে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্‌রিয়ার আলম বলেন, ‘বহুপক্ষীয় সম্পর্কের এই যুগে মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘের মেকানিজম ব্যাপক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। মানবাধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল আশা অনুযায়ী কাজ করছে না। অনেক ক্ষেত্রেই জাতিসংঘ মানবাধিকার ইস্যু উপেক্ষা করছে, উল্টো বেশ কিছু দেশের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ইস্যুকে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। মানবাধিকার ইস্যুতে উন্নয়নশীল অনেক দেশের ক্ষেত্রে অযাচিতভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে বলেই এই দেশের জনগণ এই সরকারকে গত ২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী বলেই দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে এবং বাংলাদেশও স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল কাতারে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

‘১৬ বছরে দেশের অর্ধেক দারিদ্র্য কমাতে পেরেছে। গত ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭১ দশমিক ৬ বছরে উন্নীত হয়েছে।’

সেমিনারে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির বলেন, ‘সারা বিশ্বে এখনও মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে নারীদের প্রতি সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘একটি পক্ষ দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গত দশকে বাংলাদেশ যে উন্নয়ন করেছে, ওই পক্ষটি তা স্বীকারই করছে না। এভাবে অপপ্রচার চালিয়ে মানবাধিকার রক্ষা সম্ভব নয়। মানবাধিকার রক্ষায় সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল্য অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বে মানবাধিকারের একাধিক ভারসন দেখা যাচ্ছে। যেমন- কোথাও উইরোপিয়ান, কোথাও এশিয়ান ইত্যাদি। কিন্তু জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকার রক্ষায় সর্বজনীন যে মূলমন্ত্র বা সনদ রক্ষায় সবাই অঙ্গীকার করেছে, তা কেউ মেনে চলছে না।’

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের ১৭ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং এরপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দেশে যে সেনা-শাসন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হয়, তা সেমিনারে বিস্তারিত তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘২০০৯ সালে শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় বসার পর দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর এবং জাতিসংঘসহ এ-সংক্রান্ত বৈশ্বিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে।

‘বাংলাদেশ অবাধ, মুক্ত এবং অংশীদারমূলক নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে। যে কারণে সরকার আগে মানুষের কথা শোনে, তারপর সমাধানের পথ বের করে। এই কারণেই বর্তমান সরকার জনগণের সরকার।’

সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করতে বদ্ধপরিকর। নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং সংবিধানের বাধ্যবাধকতা মেনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছে এবং এসব নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। এই সরকার এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আমাদের এই অবস্থান থেকে টলাতে পারবে না। সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাব।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর