• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় আমিরাত জুনের মধ্যে ৭০ ভাগ ধান-চাল সংগ্রহের নির্দেশ পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ॥ দাম কমছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আইওএম কার্যকর ভূমিকা রাখবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে, বললেন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী গ্রাম আদালতের জরিমানার ক্ষমতা বাড়ল শেয়ার বাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১শ কোটি টাকা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জন্য আরো তহবিল সংগ্রহ করুন বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় আমিরাত জুনের মধ্যে ৭০ ভাগ ধান-চাল সংগ্রহের নির্দেশ পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ॥ দাম কমছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আইওএম কার্যকর ভূমিকা রাখবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে, বললেন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী গ্রাম আদালতের জরিমানার ক্ষমতা বাড়ল শেয়ার বাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১শ কোটি টাকা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা

অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪

শূন্য থেকে যাত্রা শুরু। সাবমেরিন কেবল থেকে মহাশূন্য বিজয়। সর্বত্র লাল-সবুজ পতাকার জয়জয়কার। দারিদ্র্যের তলাবিহীন ঝুড়ি, বারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন পিতৃহন্তারক জাতি হারতে হারতেও জেগে ওঠেছে ফিনিক্স পাখির মতো।

জাতির পিতার স্বপ্ন, আদর্শ পুঁজি করেই তার উত্তরসূরির নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লড়াই। ৫৩ বছরে অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ তৈরি করেছে শতবর্ষব্যাপী উন্নয়নের রূপরেখা। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ শেষে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর উন্নয়নশীল বিশ্বের ‘রোলমডেল’ বাংলাদেশ।

৫৩ বছরে দরিদ্রতার তকমা ঘুচিয়ে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর ঘটেছে বাংলাদেশের। রূপকল্প ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশের স্বপ্নে বিভোর জাতি। এক দশকে দারিদ্র্য কমেছে ১৫ শতাংশের বেশি। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৫ গুণ আর জিডিপি বেড়েছে ৩০ গুণ। ১৯৭০ সালে এই অঞ্চলের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১৪০ ডলার, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এসে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২১ মার্কিন ডলারে। শতভাগ বিদ্যুৎ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পায়ন, গৃহায়ণ, নগরায়ণ, ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার, দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ প্রশমনে বদলে গেছে বাংলাদেশের চেহারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ- যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেয়ার লড়াই সংগ্রামের সুবিশাল ইতিহাস।

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন, পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প, রপ্তানি আয় বাড়াসহ অর্থনৈতিক সূচকে অগ্রগতি, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রো রেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পে অগ্রগতিতে বদলে গেছে বাংলাদেশের চেহারা। দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। পঞ্চাশ বছরে খাদ্য উৎপাদনে বিস্ময়করভাবে এগিয়েছে বাংলাদেশ। পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে।

গতকাল সোমবার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ অনুষ্ঠানে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় রেখে যান। সেখান থেকে আমরা আরো এক ধাপ উত্তরণ ঘটিয়ে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছি। ২০২৬ সাল থেকে যা কার্যকর হবে। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলে, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমার এগিয়ে যাবো।

চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ : বিশ্লেষকদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল বৈশিষ্ট্য বৈষম্যমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অসা¤প্রদায়িক, অন্যায়, অবিচার, শোষণ, নিষ্পেষণমুক্ত সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক দেশ গড়াই আজকের চ্যালেঞ্জ। এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু যে ধর্মনিরপেক্ষ অসা¤প্রদায়িক বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন, গত ৫০ বছরে দেশে এই বৈষম্য আরো বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর উল্টোপথে যাত্রা করে বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাহাত্তরের সংবিধানে বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পথ উন্মুক্ত করে দেন জিয়াউর রহমান। পরে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হলেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। ফলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর রাষ্ট্রশক্তির সহায়তায় ফুলে-ফেঁপে আরো বড় হয়েছে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, পঁচাত্তরের পর ইতিহাস পাল্টে ফেলার চক্রান্তে বন্দি হয় রাষ্ট্র-সমাজ। জিয়া-এরশাদের আমলের ইতিহাসবিকৃতির মহোৎসবের অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার শুরু এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার ও রায় কার্যকর হওয়া আমাদের বড় অর্জন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটলেও কমেনি ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। অধরাই থেকে যাচ্ছে গণতন্ত্রের স্বপ্ন। গণতন্ত্রের কাঠামো তৈরি হয়েছে, কিন্তু কাঠামোয় প্রাণের স্পন্দন এখনো শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারী নেত্রী অধ্যাপক মাহফুজা খানম ভোরের কাগজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পেয়েছি, এটি বড় প্রাপ্তি। কিন্তু পঁচাত্তরে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুন্ঠিত হয়। এই ব্যর্থতা, এই দায় আমাদের সবার।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের লড়াই এখনো শেষ হয়নি, সেই লড়াই আমাদের অব্যাহত রয়েছে। আমি তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আশার স্বপ্ন দেখি। দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে, এখন মেধা, মনন, সাংস্কৃতিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জাগরণ প্রয়োজন। এটি সফল করবে তরুণরাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর