• রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সম্পাদক রনজক রিজভী সলঙ্গা থানা ইলেকট্রিক এন্ড প্লাম্বিং সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাজবীর সজীবের ৫ বই সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ যমুনার তীর রক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না -বিএনপি নেতা এম এ মুহিত সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলা হাতিরঝিল লেক থেকে জি টিভির সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকে শোকজ চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ১৫ পুলিশ হত্যা, আ.লীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা সলঙ্গায় ছাত্র-জনতার উপর হামলা,আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার ঝাল বেশি কাঁচামরিচে, কেজি ১ হাজার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২৫% থেকে কমে ৫.৬% প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় থাকছেন না পিএসসির কর্মকর্তারা টেন মিনিট স্কুলে ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাতিল সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছাড় নয়

সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র পদ্মায় ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১০৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩

পদ্মা নদীতে ভাসমান খাঁচায় চাষ হচ্ছে তেলাপিয়া মাছ। এর সঙ্গে পরীক্ষামূলক রুই, কাতলাসহ কয়েক প্রজাতির মাছও রয়েছে খাঁচাগুলোতে। পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ কাজে লাগিয়ে খাঁচায় বছরে তিনবার মাছ চাষ করা সম্ভব। এমন পদ্ধতিতে সল্প খরচে অধিক মাছ উৎপাদন হওয়ায় বড় পরিসরে মাছ চাষের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের টাঙ্গনগ্রামে পদ্মা নদীতে এমন ভাসমান খাঁচায় মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া মাছের চাষ করা হচ্ছে। এই গ্রামের ৪০ জনের সদস্য এই মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারা সবাই ইউসুফপুর টাঙ্গন মৎসজীবী সমবায় সমিতির সদস্য। এই প্রথম পরীক্ষমূলক রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৬২টি তেলাপিয়া মাছের পোনার ওজন ছিল এক কেজি। এমন পোনা মাছ ছাড়া হয়েছিল খাঁচাগুলোতে। খাঁচায় মাছ ছাড়ার একমাস ১৪ দিনের মাথায় মাত্র ৬টি তেলাপিয়া মাছের ওজন দাঁড়িয়েছে এক কেজিতে। ফলে মাত্র ৪৪ দিনে একটি মাছের ওজন হয়েছে প্রায় ১৬১ গ্রাম। আগামী এক মাসের মধ্যে একেকটি মাছের ওজন প্রায় ৩০০-৪০০ গ্রাম হবে। এই মাছগুলো অতিদ্রুত বাড়ছে। এর আগে পদ্মা নদীতে ১০টি খাঁচার জাল, দড়ি, বাঁশ, ড্রাম, জিআই পাইপ দিয়ে খাচা স্থাপন করা হয়েছে। পরে সেই খাঁচাগুলোতে তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে।

খাঁচার মাছগুলোকে খাবার দিচ্ছেন নজিবার হোসেন (৫২)। তিনিও এই সমিতির সদস্য। তাকে মাছের খাবার দেওয়া ও দেখাশোনার জন্য প্রতিমাসে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ঢাকা পোস্টকে নজিবার হোসেন বলেন, অল্প খাবার করে দিনে চারবার খাবার দেয়। চারবারে ১০ থেকে ১২ কেজি খাবার লাগে। নদীর পানি হওয়া মাছ দ্রুত বাড়ছে।

ইউসুফপুর টাঙ্গন মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মাহাবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘কাঁচা পদ্ধতিতে বছরে তিনবার মাছের চাষ করা যাবে। একটা খাঁচায় এক হাজার পিস মাছ আছে। ১০টি খাঁচায় ১০ হাজার পিস মাছ আছে। প্রতিটি খাঁচার পরিমাণ ১২০০ ঘন ফুট। এখানে ১০টি খাঁচায় ১৫ শতাংশ জলকর (পানির আয়তন) হবে। এভাবে মাছ চাষের সুবিধা হচ্ছে জলকর ফ্রি। নদীর পানি হওয়ায় তেমন কোন খরচ নেই। নদী ছাড়া মাছ চাষ করতে গেলে আমাদের পুকুর বাবদ টাকা দিয়ে হতো। এখানে সেই টাকা লাগছে না। খোলা পানি হওয়ায় মাছের তেমন খাবার দিতে হয় না। একই সঙ্গে ওষুধ লাগে না। নদীর পানি হওয়ায় মাছগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আমাদের খাঁচায় মাছ চাষের জন্য সহযোগিতা করা হয়েছে। কারণ পদ্মায় এমনিতেও মাছ কমে গেছে। তাই এই পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে মাছের চাষ করা হচ্ছে। এটা আমাদের তিন মাসের প্রজেক্ট। তবে পদ্মার পানি বেড়েছে। স্রোতের কারণে সমস্যা হতে পারে। তেমন হলে মাছ তুলে বিক্রি করে দেওয়া হবে। মাছগুলো বিক্রি করা হলে আমাদের সমিতির ফাণ্ডে টাকা রাখা হবে। পরে মাছ চাষে খরচ করা হবে।

খাঁচায় মাছ চাষে জড়িতরা জানান, প্রবাহমান নদীর পানিকে ব্যবহার করেও খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। মাছের বর্জ্য প্রবাহমান পানির সঙ্গে চলে যায়। ফলে পানি দুষণ হয় না। এতে করে মাছ মরে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। নদীর পানি প্রবাহমান থাকায় প্রতিনিয়ত খাঁচার অভ্যন্তরের পানি পরিবর্তন হয়। যেটি পকুরে সম্ভব না। ফলে পুকুরের চেয়ে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায়।

চারঘাটের ইউসুফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মাখন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খাঁচায় মাছ চাষ। অনেক ভালো উদ্যোক্তা। অনেকেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পুকুর খননের হাত থেকে রক্ষা পাবে কৃষি জমি। তবে এই মাছগুলো চাষের হলেও নদীর পানির। তবে মাছ গুলো খেতে ভাল লাগবে।

চারঘাট উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ মোল্লা ঢাকা পোস্টকে জানান, এই পদ্ধতিতে বছরে তিনবার মাছের চাষ করা যাবে। এইভাবে মাছ চাষ করলে খুব সীমিত খরচ হয়। এই খাঁচায় ছাড়া ৬২টি তেলাপিয়া মাছের ওজন ছিল এক কেজি। একমাস ১৪ দিনে ৬টি তেলাপিয়া মাছের ওজন দাঁড়িয়েছে এক কেজিতে। খাঁচাগুলো মাছে ভরে গেছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের ইতিহাস অনেক পুরানো। পদ্মা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। এইভাবে মাছ চাষ সম্ভবনাময়। দেশের অন্য নদী অঞ্চলে এইভাবে মাছের চাষ করা হয়। নদী এলাকায় বসবাসরত মৎস্যচাষীদের সংগঠিত করে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে এই মাছ চাষ অর্থনীতি ভূমিকা রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর