• শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৪:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সম্পাদক রনজক রিজভী সলঙ্গা থানা ইলেকট্রিক এন্ড প্লাম্বিং সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাজবীর সজীবের ৫ বই সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ যমুনার তীর রক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না -বিএনপি নেতা এম এ মুহিত সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলা হাতিরঝিল লেক থেকে জি টিভির সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকে শোকজ চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ১৫ পুলিশ হত্যা, আ.লীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা সলঙ্গায় ছাত্র-জনতার উপর হামলা,আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার ঝাল বেশি কাঁচামরিচে, কেজি ১ হাজার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২৫% থেকে কমে ৫.৬% প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় থাকছেন না পিএসসির কর্মকর্তারা টেন মিনিট স্কুলে ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাতিল সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছাড় নয় আজ পবিত্র আশুরা

বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির উদার প্রশংসায় বিজেপি

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৭৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩

এ যেন এক আজব  উলটপুরাণ! বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা নির্যাতিত হচ্ছেন বলে প্রতিবেশী ভারতে যে শাসক দল বিজেপি লাগাতার অভিযোগ করে থাকে, তাদেরই শীর্ষ নেতারা এখন সে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভূয়সী প্রশংসা করছেন। মুসলিম-গরিষ্ঠ বাংলাদেশে হিন্দুরা যে বিনা বাধায় এবং মহাসমারোহে নিজেদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারছেন, সে কথা আজকাল তারা বলছেন প্রকাশ্যেই।

এখানে উপলক্ষটা হলো পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের সাম্প্রতিক রামনবমী উৎসবকে ঘিরে তৈরি হওয়া সম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সহিংসতা।

গত ৩০ মার্চ হাওড়া ও হুগলী জেলা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দুদের রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, বেশ কয়েক জায়গায় হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। সেই অশান্তি ও উত্তেজনার রেশ এখনও ধিকি ধিকি জ্বলছে এবং সেদিনের পর থেকেই রাজ্যের রাজনীতি ওই ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে রয়েছে। উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও বিজেপি নেতৃত্ব পরস্পরকে দোষারোপ করছেন প্রকাশ্যেই।

এই পটভূমিতেই গত ৩১ মার্চ বাংলাদেশে হিন্দুদের রামনবমী শোভাযাত্রার বেশ কয়েকটি ছবি টুইট করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ও ডাকসাইটে এমপি দিলীপ ঘোষ।

সেই সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির এই সাবেক প্রেসিডেন্ট লেখেন—  ‘বাংলাদেশে রামনবমীতে হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা। তবে আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে হিন্দুদের ওপর কেউ কিন্তু হামলা চালায়নি। আর এখান থেকেই পরিষ্কার যে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা বাংলাদেশের হিন্দুদের চেয়ে অনেক বেশি বিপদে আছেন।’

দিলীপ ঘোষের ওই টুইট সার্বিকভাবে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তো বটেই, বিজেপির সমর্থকদের মধ্যেও প্রত্যাশিতভাবেই বেশ আলোড়ন ফেলেছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে যে দল কথায় কথায় বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকে, তারা হঠাৎ কেন সেখানকার শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় পরিবেশের প্রশংসা করছেন— এই প্রশ্ন ভাবিয়ে তোলে বিজেপি অনুগামীদেরও।

তবে দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় পর্যায়ের মুখপাত্র আর পি সিং দাবি করছেন, এর মধ্যে বিন্দুমাত্র স্ববিরোধিতা নেই।

রবিবার (৯ এপ্রিল) আর পি সিং বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিজেপি নিছক নিন্দা করার জন্যই বাংলাদেশের কোনও পরিস্থিতির নিন্দা করে— বিষয়টা মোটেও এমন নয়। বরং সেখানে যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির দারুণ কোনও উদাহরণ স্থাপিত হয়, আমরা মুক্তকণ্ঠে সেটার তারিফ করতে রাজি। এবারের রামনবমীতেও ওখানে ঠিক সেটাই দেখা গেছে, অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাশের পশ্চিমবঙ্গে ছিল একেবারে উল্টো ছবি।’

আর পি সিং আরও  মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘বাংলাদেশে ২০২১ সালে দুর্গাপুজার সময় যখন অনেকগুলো প্রতিমা ও মণ্ডপ ভাঙচুর করা হয়েছিল, আমরা তার নিন্দা করেছিলাম। আবার পরের বছরই সেখানে যখন নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে, আমরা তখন নির্দ্বিধায় তার প্রশংসা করেছি, বাংলাদেশের সরকার ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’

বিজেপি নেতাদের এই জাতীয় কথাবার্তা থেকে স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে রাজনৈতিক আক্রমণ করার জন্যই তারা বাংলাদেশের তুলনা টানছেন এবং বাংলাদেশে রামনবমী উৎসব পালনকে দৃষ্টান্ত হিসেবে পেশ করছেন।

কলকাতায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিবাজী রঞ্জন মৌলিক আবার বিজেপির এই পদক্ষেপে একটা ইতিবাচক দিকও দেখতে পাচ্ছেন।

রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মৌলিক এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুরা নির্যাতিত, এই ন্যারেটিভটা বিজেপি বহু বছর ধরে তাদের রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, শুধু এই কারণে তারা ভারতের নাগরিকত্ব আইনেও একটা চরম বিতর্কিত সংশোধনী এনেছে, যা গোটা দেশে প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।’

‘কিন্তু এই রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তা কিন্তু অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী হাসিনাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন— ভারতের সিএএ (নাগরিকত্ব আইন) তিনি পছন্দ করেননি। এখন পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক লাভ পাওয়ার লক্ষ্যে হলেও বিজেপি যদি বাংলাদেশের সদর্থক ভূমিকার প্রশংসা করে, সেটা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ভালো লক্ষণ’, মন্তব্য করেন শিবাজী রঞ্জন মৌলিক।

পশ্চিমবঙ্গকে কিছুতেই ‘পশ্চিম বাংলাদেশ’ হতে দেওয়া যাবে না, এই ধরনের কথাবার্তা রাজ্যের বিজেপি নেতারা গত কয়েক বছর ধরে অহরহ বলে এসেছেন। এখন তারা এই রাজনৈতিক প্রসঙ্গে বাংলাদেশের রেফারেন্স টানা বন্ধ করেন কিনা, দেখার বিষয় সেটাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর