• সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সম্পাদক রনজক রিজভী সলঙ্গা থানা ইলেকট্রিক এন্ড প্লাম্বিং সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাজবীর সজীবের ৫ বই সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ যমুনার তীর রক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না -বিএনপি নেতা এম এ মুহিত সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলা হাতিরঝিল লেক থেকে জি টিভির সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকে শোকজ চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ১৫ পুলিশ হত্যা, আ.লীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা সলঙ্গায় ছাত্র-জনতার উপর হামলা,আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার ঝাল বেশি কাঁচামরিচে, কেজি ১ হাজার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২৫% থেকে কমে ৫.৬% প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় থাকছেন না পিএসসির কর্মকর্তারা টেন মিনিট স্কুলে ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাতিল সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছাড় নয়

ঢাকা থেকে বেনাপোল তিন ঘণ্টায়

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১৯৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রেললাইন স্থাপন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে, যার অপেক্ষায় দিন গুনছে এ অঞ্চলের কোটি মানুষ। সংশ্লিøষ্টরা বলছেন, এই রেললাইন চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১ কোটি মানুষ সরাসরি উপকার পাবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। সুবিধা পাবেন এ অঞ্চলের কৃষিজীবীরাও। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা এসব তথ্য পাঠিয়েছেন।

যশোর : পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রেললাইন প্রকল্পের যশোর অংশের কাজ এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। বিভিন্ন স্থানে স্টেশন নির্মাণ, রেললাইন স্থাপন ও সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ রুট চালু হলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। খুলনা ও বেনাপোল থেকে ঢাকাগামী ট্রেনও এ রুট ব্যবহার করবে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সঙ্গে রেল যোগাযোগেও এর ব্যবহার হবে। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের উপশাখা হিসেবেও কাজ করবে এই রুট। এখন খুলনা, যশোর, বঙ্গবন্ধু সেতু (যমুনা সেতু) হয়ে ঢাকায় যেতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। এই রুট চালু হলে খুলনা, যশোর ও বেনাপোল থেকে তিন ঘণ্টায় রাজধানীতে পৌঁছানো যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের আওতায় ৪১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে রেললাইন স্থাপনসহ ১৪টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ৬৬টি বড় সেতু, ২৪৪টি ছোট সেতু এবং ৩০টি রেল ক্রসিং গেটও তৈরি হচ্ছে। এই রেল সংযোগ যশোরের রূপদিয়া থেকে জামদিয়া, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী, মহেশপুর, মুকসুদপুর, নগরকান্দা, ভাঙ্গা, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাবে ট্রেন।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার শারাফত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রকল্পের যশোর সেকশনের কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন হবে, তিনি আশা প্রকাশ করেন। এতে যশোর-খুলনার মানুষ ঢাকায় গিয়ে কাজ সেরে একদিনেই ফিরে আসতে পারবেন।

যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রেলরুট চালু হলে আমদানি-রপ্তানি পণ্যে পরিবহন খরচ ও সময় অনেক কমে যাবে। যশোর-খুলনা অঞ্চল মূলত কৃষি প্রধান। দেশের সবজি, ফুল এবং রেণু পোনার বড় একটি অংশ যশোরে উৎপাদন হয়। ট্রাকে এসব পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়ার সময় ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয়, সময় নষ্ট হয়। পচনশীল পণ্য অনেক সময় রাস্তায়ই পচে যায়। এই রেল সংযোগ চালু হলে তিন ঘণ্টায় এ অঞ্চলের কৃষি পণ্য ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। এতে পরিবহন খরচ যেমন কমবে। ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হবে না। পণ্য নষ্ট হওয়ার ভয় থাকবে না। ভোক্তারাও এর সুবিধা পাবেন।

শরীয়তপুর : গত বছরের ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতুতে চলাচল করছে যানবাহন। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে রেল চলাচল। প্রাথমিকভাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করবে রেল। ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলছে ৪টি স্টেশন ও ভাঙ্গা জংশনের নির্মাণকাজ। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার অংশে শেষ হয়েছে ব্রডগেজ রেলপথ বসানোর কাজ। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে মূল সেতুর ওপর ৬.১৫ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তের ৪.০৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের পাথরবিহীন রেলপথ ঢালাই কাজ। সড়ক পথের পর রেলপথ উন্মুক্ত হতে যাওয়ায় খুশি দক্ষিণের মানুষ। তবে রেল সুবিধার আওতায় না আসায় আক্ষেপ রয়েছে শরীয়তপুরের মানুষের।

ভাঙ্গা : ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচল এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ইতোমধ্যে এ রুটে ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। ভাঙ্গায় রেল জংশন নির্মাণকাজও শেষ পর্যায়ে। ৪ এপ্রিল ভাঙ্গা রেলস্টেশনে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত টেস্টরান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

নির্মাণাধীন জংশন ভবনের কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি ফলক অনুযায়ী জংশন ভবনের আয়তন হচ্ছে ৪ হাজার ৯৯৮ বর্গমিটার। এটি হবে দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক জংশন ভবন। জংশন ভবন এলাকার বাসিন্দা কৃষক মেহের আলী মুন্সী (৭০) বলেন, কোনো দিন ভাবিনি এখান দিয়ে রেল চলাচল করবে। এক সময় জংশন এলাকায় কিছু বাড়িঘর ও ডোবা ছিল।

বেনাপোল : দেশের অর্থনীতি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় আগামী বছর যোগ হবে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় পালকটি। এই রেল যোগাযোগ চালু হলে স্বল্প সময়ে বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছানো যাবে। প্রকল্পটি শেষ হলে শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয় ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। ঢাকা থেকে বেনাপোল হয়ে কলকাতায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা। যাত্রী পরিষেবার পাশাপাশি বেনাপোল বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি সক্ষমতা বাড়বে ৩ গুনেরও বেশি। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে দেশের সবচেয়ে বড় সবজি উৎপাদনকারী যশোরের কৃষি এবং কৃষকদের। ঘুরে দাঁড়াবে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য খাত।

বেনাপোল পথে ভারতগামী যাত্রীর সংখ্যা বছরে প্রায় ১৮ লাখ। ঢাকা-বেনাপোল রেলপথ চালু হলে সাতক্ষীরা ও খুলনার মৎস্য ব্যবসায়ীদের ভাগ্যের চাকাও খুলে যাবে। বাড়বে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি। ফেডারেশন অব কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টের সভাপতি শামছুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর