• বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সম্পাদক রনজক রিজভী সলঙ্গা থানা ইলেকট্রিক এন্ড প্লাম্বিং সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাজবীর সজীবের ৫ বই সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ যমুনার তীর রক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না -বিএনপি নেতা এম এ মুহিত সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলা হাতিরঝিল লেক থেকে জি টিভির সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকে শোকজ চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ১৫ পুলিশ হত্যা, আ.লীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা সলঙ্গায় ছাত্র-জনতার উপর হামলা,আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার ঝাল বেশি কাঁচামরিচে, কেজি ১ হাজার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২৫% থেকে কমে ৫.৬% প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় থাকছেন না পিএসসির কর্মকর্তারা টেন মিনিট স্কুলে ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাতিল সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছাড় নয় আজ পবিত্র আশুরা

জুনে সংস্কার কাজ শুরু ট্রেন চলবে সেপ্টেম্বরে

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ১১২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩

দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন চালু হতে পারে আগামী সেপ্টেম্বরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নতুন এই রেললাইনের উদ্বোধন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। তাই জুন মাসে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হবে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেতুটিকে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।

গতকাল শনিবার শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন ও ফেরি চালুর বিষয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মতবিনিময় সভায় রেলসচিব এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর বর্তমান অবস্থা এবং বোয়ালখালীবাসীর দুরবস্থা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কথা শোনেন তিনি।

কক্সবাজারে দ্রুতগতিতে রেল যাওয়ার জন্য কালুরঘাট সেতু সংস্কার করা হচ্ছে জানিয়ে রেলসচিব বলেন, কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে সারা দেশের মানুষের ট্রেনে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। পুরনো কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করতে ছয় মাস লাগবে। তবে সেতুতে বিদ্যমান রেললাইনের সংস্কার কাজ তিন মাসের (সেপ্টেম্বরে) মধ্যে শেষ করা হবে। আপাতত সেতুর রেললাইন সংস্কার করে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এই তিন মাস ট্রেন (চট্টগ্রাম–দোহাজারী রুট) চলাচল বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি সকল ধরনের যান চলাচলও বন্ধ থাকবে। মানুষের চলাচলের জন্য ওয়াকওয়েসহ পুরো কাজ শেষ করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকলে মানুষের অসুবিধা হবে। পুরনো সেতুটি সংস্কারের সময় ভারী যানবাহনগুলোকে শাহ আমানত সেতুর দিকে পাঠানো গেলে আর সমস্যা হবে না। ছোট ছোট যানবাহনগুলো ফেরি দিয়ে চলাচল করবে। ফেরির সংখ্যা দুটির পরিবর্তে চারটি করা যায় কিনা এ নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হবে। তবে সংস্কার কাজ হয়ে গেলে সেই কষ্ট আর থাকবে না। ২০২৮ সালে নতুন সেতু নির্মাণ হলে দুর্ভোগ দূর হবে। সভায় প্রধান অতিথি রেলসচিব মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ইতোমধ্যে নতুন সেতু নির্মাণের নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। নকশা জটিলতার কারণে মাঝখানে দুই বছর পার হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এক ঘণ্টা সময় দিয়েছেন। তিনি পুরো বিষয়টি দেখে কালুরঘাট সেতুর নকশা চূড়ান্ত করেছেন। নতুন সেতু হবে ডাবল লাইনের। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আপনারা নতুন সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের যে দাবি করেছেন আপনাদের এই বার্তাটি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেব।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রেলপথের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হবে। নতুন রেলপথ দিয়ে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পর্যটন শহরে পৌঁছে যাবে।

সভায় প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত উপস্থাপন করেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা। তিনি বলেন, ১৯৩১ সালে চালু হওয়া কালুরঘাট সেতুর অবস্থা খুব খারাপ। সংস্কার ছাড়া কক্সবাজার পর্যন্ত ভারী ইঞ্জিনের ট্রেন নেওয়া সম্ভব নয়। বুয়েটের পরামর্শক দল সেতুটির সংস্কার করে ট্রেন চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে। তাদের পরামর্শে সেতু সংস্কার করা হবে। সংস্কার কাজের জন্য ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ২০ জুন সংস্কার কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। সেপ্টেম্বরে মূল সংস্কার কাজ শেষ করা হবে। এবারের সংস্কার কাজে রেলসেতুতে মানুষের হেঁটে পার হওয়ার জন্য ওয়াকওয়ে (হাঁটাপথ) রাখা হবে। বর্তমানে এই সেতুতে ট্রেনের গতিবেগ ১০ কিলোমিটার। সংস্কারের পর ৫০–৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করা যাবে।

পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী বলেন, বর্তমান কালুরঘাট সেতুটি ১৯৩১ সালে চালুর পর প্রথম ভারী সংস্কার হয়েছিল ১৯৮৬–৮৭ সালে। দ্বিতীয় ভারী সংস্কার হয়েছিল ২০০৪–০৫ সালে। সেতুটিতে ১৮টি স্তম্ভ, ১৯টি স্প্যান রয়েছে। সেতুতে মোট ৩১টি গার্ডারের মধ্যে আন্ডার স্ল্যাঙ্গ গার্ডার ১২টি, ডেক টাইপ গার্ডার ছয়টি, একটি থ্রো টাইপ গার্ডার ও ১২টি পার্ট গার্ডার। সেতুর ওয়েল ফাউন্ডেশনের গভীরতা ২০ দশমিক ৭৮ মিটার।

সভায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, সেতুর বিকল্প হিসেবে নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। এজন্য দুটি ফেরি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফেরি রাখা হয়েছে বিকল্প হিসেবে।

সভায় জুন–জুলাই বর্ষাকালে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বোয়ালখালীর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা। এ সময় বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, পৌরসভার চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সেলিম চৌধুরী ও সাংবাদিক অধীর বড়ুয়া সেতু মেরামতকালীন মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ দৃশ্যমান করার দাবি তোলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, কালুরঘাটে নতুন সেতু নিয়ে আমরা যারা রাজনীতি করি তাদেরকে এলাকাবাসীর কাছে বারবার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সেতুর দাবি নিয়ে সোচ্চার থাকা দুজন সংসদ সদস্য মারা গেছেন। কিন্তু সেতু হয়নি। আবার বিদ্যমান সেতু সংস্কার করে দেওয়ার পর নতুন করে সেতু হবে কিনা এ নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সেই সন্দেহ দূর করতে হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, নদীর যে গভীরতা তাতে ভাটার সময় ফেরি চলতে কোনো সমস্যা হবে না। তবে নদীর উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করলে যানজট কমে যাবে। তখন যানবাহন চলাচলে সুবিধা হবে। মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

পৌরসভার চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম সেতুর সংস্কার কাজ জুনের ১৫ তারিখ শুরু না করে জুলাই–আগস্টের ১৫ তারিখ শুরু করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জুন মাসে বর্ষা শুরু হবে। এ সময় নদীতে ফেরি চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে জোয়ারের সময় ফেরি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এভাবে যদি বন্ধ থাকে তাহলে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এ ব্যাপারে বিকল্প ভাবতে হবে। দুটির পরিবর্তে চারটি ফেরি চালুর পরামর্শ দেন তিনি।

বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, আমি ১১ মাস ধরে বোয়ালখালীতে আছি। কালুরঘাটে নতুন সেতু নিয়ে মানুষের মনে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা মনে করছেন কালুরঘাটে নতুন সেতু হবে না। তাই আগামী নির্বাচনের আগে নতুন সেতু নিয়ে সরকারি ঘোষণা দেওয়া হলে মানুষের অসন্তোষ দূর হবে। তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য সেতু বন্ধ হয়ে গেলে দুটি ফেরি দিয়ে যানজট হয়ে যেতে পারে। এই সেতু দিয়ে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। চারটি ফেরি চালু হলে যানজট কমবে বলে মনে করি।

জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে রেলসচিব বলেন, নতুন সেতু হবে। নতুন রেলসেতুর নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সেতুর নকশা অনুমোদন দিয়েছেন। এখন চুক্তির বিষয়ে আলাপ–আলোচনা চলছে। এসব কিছু সম্পন্ন হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হবে। ২০২৮ সালের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরী, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমানসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর