• বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৯:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সম্পাদক রনজক রিজভী সলঙ্গা থানা ইলেকট্রিক এন্ড প্লাম্বিং সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাজবীর সজীবের ৫ বই সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ যমুনার তীর রক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না -বিএনপি নেতা এম এ মুহিত সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলা হাতিরঝিল লেক থেকে জি টিভির সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকে শোকজ চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ১৫ পুলিশ হত্যা, আ.লীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা সলঙ্গায় ছাত্র-জনতার উপর হামলা,আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার ঝাল বেশি কাঁচামরিচে, কেজি ১ হাজার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২৫% থেকে কমে ৫.৬% প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় থাকছেন না পিএসসির কর্মকর্তারা টেন মিনিট স্কুলে ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাতিল সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছাড় নয়

পণ্যভিত্তিক পুঁজিবাজার চালু অক্টোবরে

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৪৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার দেশে চালু হতে যাচ্ছে পণ্যভিত্তিক পুঁজিবাজার বা কমোডিটি এক্সচেঞ্জ। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের অক্টোবরেই চালু হবে নতুন এ বাজার ব্যবস্থা।

ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের অভিজ্ঞতা অনুসরণ করে শুরু হবে প্রাথমিক কার্যক্রম। এজন্য আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংগতি রেখে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি ও প্রবিধিমালা তৈরি করা হয়েছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম চালুর বিষয়ে এরই মধ্যে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সবুজ সংকেত মিলেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, দেশের প্রথম কমোডিটি চালুর প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই মধ্যে কমিশনের কাছে এক্সচেঞ্জ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে সিএসই। শিগগিরই আবেদনটি অনুমোদন পাবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কমোডিটি এক্সচেঞ্জে মূলত খনিজ ও কৃষিপণ্য কেনাবেচা হবে। শুরুতে তিনটি খনিজ পণ্যকে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে। তালিকাভুক্ত পণ্য কেনাবেচা হবে ক্যাশ সেটেলমেন্ট ও নন-ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্টের যে কোনো একটি পদ্ধতিতে।

এর আগে সিএসইর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে কমিশনের কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর অনুমোদন দিয়েছিল বিএসইসি। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে সিএসইর এক-চতুর্থাংশ শেয়ার কেনার মাধ্যমে কৌশলগত মালিকানা বা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারকে শুধু শেয়ার লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বহুমাত্রিকতা জরুরি। বাংলাদেশের পুঁজিবাজার শেয়ারবাজার লেনদেননির্ভর থাকায় এর কার্যক্রম একটি চক্রে ঘুরছে। মুদ্রাবাজার ও পণ্য বাজারের সমন্বয়ের পাশাপাশি বন্ড মার্কেট বিশ্বের অনেক দেশ এগিয়ে নিয়েছে। পুঁজি সংগ্রহ ও বিনিয়োগের এসব ব্যবস্থা থাকলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ে। অন্যদিকে সরকারের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থের জোগানে ঋণনির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, যা দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে বিশেষ সহায়তা করে।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ কী: অনেকটা শেয়ারবাজারের মতো হলেও কমোডিটি এক্সচেঞ্জ শেয়ারবাজার নয়। শেয়ারবাজারের মতো ক্রেতা ও বিক্রেতা থাকলেও এ বাজারে লেনদেন হয় মিল গেটে তেল, চিনির ডেলিভারি অর্ডার বা ডিও লেটারের মতো। যেখানে পণ্যের ধরন, গুণমান ও পরিমাণ উল্লেখ থাকে। এটি দেখেই আগ্রহী ক্রেতার প্রস্তাবের ভিত্তিতে পণ্যটি লেনদেন করা যায়। শেয়ারবাজারের মতোই পুরো প্রক্রিয়াটি নির্দিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়।

জানা গেছে, চলতি মাসেই সিএসইর কমোডিটি এক্সচেঞ্জের নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন হবে। মার্চের মধ্যে নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রস্তুত হবে। এর মধ্যে লেনদেনে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্রোকারেজ হাউসকে আলাদাভাবে অনুমোদন নিতে হবে। ব্রোকার এবং মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে জুলাইর মধ্যে সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জের বিজনেস রিকোয়ারমেন্ট স্পেসিফিকেশন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এ ছাড়া এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং সফটওয়্যারটি মাল্টি ক্লাস হওয়ায় কমোডিটি এক্সচেঞ্জের জন্য নতুন কোনো সফটওয়্যার ক্রয়ের প্রয়োজন হবে না। সফটওয়্যারে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের ফাংশনালিটি, লজিক, প্রোগ্রামিং এর কিছু কাজ রয়েছে। সেজন্য তথ্যপ্রযুক্তি দল কাজ করছে। ভেন্ডর চলতি মাসে সফটওয়্যার কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া চালু করছে। একই সঙ্গে চলছে বাজার সচেতনতামূলক কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বাস্তবায়ন কাজ প্রত্যাশিত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

লেনদেন পদ্ধতির বিষয়ে জানা গেছে, কাঠামোটি বর্তমান ইক্যুইটি বাজারের মতোই হবে। এ বিষয়ে সিএসই পণ্য ও বাজারের ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা করছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জে দুই ধরনের সেটেলমেন্ট পদ্ধতি রয়েছে। এর একটি ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতি এবং অন্যটি নন-ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতি। এর মধ্যে নন-ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতিতে ওয়্যার হাউস ও গোডাউন লাগে না। বিশ্বের বেশিরভাগ কমোডিটি এক্সচেঞ্জই শুরুতে ক্যাশ সেটেলমেন্ট দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম কালবেলাকে বলেন, ‘যেহেতু কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিষয়টি দেশের জন্য নতুন, সেজন্য ব্যবসায়ীদের জন্যও নতুন হবে। আমদানিকারকদের জন্য বুঝতে সহজ হবে। কারণ, তারা এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

তিনি বলেন, ‘দেশে এটি আরও আগে দরকার ছিল। যাই হোক দেরিতে হলেও শুরু হচ্ছে। এর মাধ্যমে একটি দেশের সার্বিক উৎপাদন, ঘাটতি, আমদানি ও সরবরাহ চিত্র সহজে নির্ণয় করা যায়। আমরা এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। পরিসংখ্যান দিকে থেকে আমাদের তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এক্সচেঞ্জটি চালু হলে অন্তত এ দিকটায় উন্নতি হতে পারে। আর তথ্যগত প্রস্তুতি না থাকলে শুরুতে নিত্যপণ্যভিত্তিক লেনদেন শুরু না করাই ভালো। প্রথমদিকে ধাতব বা খনিজ পণ্য দিয়ে লেনদেন করা যেতে পারে। এ ছাড়া শিল্পের কাঁচামালের লেনদেনও হতে পারে।’

এদিকে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য আইনি কাঠামো সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) বিধিমালা ২০২৩-এর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এক্সচেঞ্জ কর্তৃক রেগুলেশনের চূড়ান্ত খসড়া প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। নিবন্ধন অনুমোদনের পরপরই এটি কমিশনে জমা দেওয়া হবে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জের জন্য প্রস্তাবিত প্রবিধানগুলোও তৈরি করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলন এবং সংশ্লিষ্ট আইওএসসিওর মৌলিক নীতি মেনে যা বাণিজ্য, নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং অংশগ্রহণকারীদের ডিফল্ট ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির মাধ্যমে স্বচ্ছতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে ২০২৩ সালে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ার অপারেশনাল প্রসিডিউর ও ওয়্যারহাউস পরিদর্শন করেন এবং ভারতের সিকিউরিটিজ ও কমোডিটি মার্কেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ায় (এসইবিআই) একটি সভায় অংশগ্রহণ করেন।

যোগাযোগ করা হলে ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘সার্বিকভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার প্রস্তুতি বলা যায়, শেষ হয়েছে। এর পরও প্রযুক্তিগত কিছু বিষয় আছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে বলা যায়, আমরা চাইলেই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে পারব।’

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের মধ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে। এটা যেহেতু একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ; তাই পুরো প্রক্রিয়াটিকে একটি প্রকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং সেই প্রকল্পের অ্যাক্টিভিটি বা কার্যক্রমগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং কোন কার্যক্রম সম্পাদনে কতদিন লাগবে, তা নিরূপণ করা হয়েছে। যেহেতু এই প্রকল্পে অসংখ্য স্টেকহোল্ডার জড়িত; তাই বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি বা কার্যক্রমের মধ্যে নির্ভরশীলতা রয়েছে।

এটা এই প্রকল্পের একটা সম্ভাব্য ঝুঁকি। এরই মধ্যে সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। কমিশন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে উদগ্রীব, সেজন্য সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার বিষয়ে আশাবাদী। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ও এই বিষয়ে সজাগ ও যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর