• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারপিট আ’লীগ নেতা আরাফাতকে গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন সলঙ্গা থানা যুবলীগের সভাপতি পদে সিভি জমা দিলেন রিয়াদুুল ইসলাম ফরিদ ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে সিলেট ও কুষ্টিয়ার সেই দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস ঢাকার পয়ঃবর্জ্য ও গ্যাস লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ আমানতের মুনাফার ওপর কর দিতে হবে না চলছে কয়লা খালাস, জাহাজেই ফিরবেন সব নাবিক দুই মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার

মিয়ানমারে ফিরে যেতে বড় সমাবেশ রোহিঙ্গা শিবিরে

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৬৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা নেতারা দ্রুত রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে এবং প্রত্যাবাসনে বাধা না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে কক্সবাজারে ওই সমাবেশ চলার সময় জেনেভায় মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাইলট উদ্যোগ অবিলম্বে স্থগিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে ফিরলে তাদের জীবন ও স্বাধীনতা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এর আগে গত সোমবার মিয়ানমারে ফিরে যেতে আগ্রহী চার রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যদের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। পরের দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকার ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিকে তলব এবং প্রত্যাবাসনে বাধা না দিতে সতর্ক করে। চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরুর লক্ষ্যে পাইলট প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।

এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধিদল রাখাইন রাজ্যে সরেজমিন দেখে এসেছে। ফিরে এসে ওই প্রতিনিধিদলের অনেকে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলেছেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতেই রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাও আছে।

এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল উখিয়া ও টেকনাফের ১৩টি শিবিরে প্রত্যাবাসনের পক্ষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। সমাবেশগুলোতে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার হাতে ধরে স্লোগান দেয়। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘লেট’স গো হোম, মিয়ানমার’; ‘ডোন্ট ট্রাই টু স্টপ রিপ্যাট্রিয়েশন’ এবং ‘হেল্প আস টু রিপ্যাট্রিয়েশন’।

উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়ার সমাবেশে বক্তারা রোহিঙ্গাদের দুঃসময়ে আশ্রয় দিয়ে পাশে থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের ওপর তাঁরা আর বোঝা বাড়াতে চান না।

সমাবেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ শেষে রোহিঙ্গা নেতারা বড় শোডাউন করে ক্যাম্পের অলিগলি প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরতে উদ্বুদ্ধ করেন। এ সময় শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ তাঁদের সঙ্গে দেশে ফিরতে সম্মতি জানিয়ে ‘লেট’স গো হোম, মিয়ানমার’ স্লোগান দেন।

সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের বলেন, ‘আমরা প্রত্যাবাসন চাই। আমরা আমাদের দেশ মিয়ানমারের আরাকানে ফিরে যেতে চাই। বছরের পর বছর আমরা বাংলাদেশে আশ্রিত জাতি হিসেবে আর সময় পার করতে চাই না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভেবে আমাদের মিয়ানমার ফিরে যাওয়া উচিত—এ কথাগুলো আমরা এখন সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। অনেকে মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার যে কর্মসূচি, তাতে আমাদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিয়েছেন।’

উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যুবনেতা মো. মুসা বলেন, ‘শুধু দাবি আদায়ের কথা বলে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় রেখে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমাদের নিজেদের দেশ থাকতে আমরা এখানে আর ভাসমান জীবন কাটাতে চাই না। এ ছাড়া মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের অনেক ভাই এখনো ভুলের মধ্যে রয়েছে। দেশে ফেরার আগে যে আমরা শুধু নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ইত্যাদি দাবি তুলছি, সেগুলো বাংলাদেশে সম্ভব নয়। তার চেয়ে নিজের দেশ জন্মভূমিতে বসবাস করা আমাদের জন্য অনেক স্বস্তির।’

প্রত্যাবাসনের সমর্থনে উখিয়ার কয়েকটি ক্যাম্পের সমাবেশে সম্প্রতি প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের পরিবারে রেশন বন্ধ করে দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার কড়া সমালোচনা করেন রোহিঙ্গা নেতা ও সাধারণ রোহিঙ্গারা। তাঁরা বলেন, ‘কেউ আমাদের সাহায্য করা মানে এই নয় যে পুরো রোহিঙ্গা জাতিকে তাদের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকতে হবে। আমাদের ভালো-মন্দ আমাদের বেছে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।’ রোহিঙ্গাদের আজীবন শরণার্থী করে রাখার পরিকল্পনা মেনে নেবেন না বলেও জানান তাঁরা।

টেকনাফ শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা জাফর আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জাতিগত ঐতিহ্য আছে, নিজেদের দেশ আছে। কোনো এক দুর্ঘটনায় আমাদের দেশ ছাড়তে হয়েছে। আমরা এখন আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই।’

লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সমাবেশে উপস্থিত বয়োবৃদ্ধ সালামত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদা পূর্বপুরুষরা আরাকানের মাটিতে শুয়ে আছেন। আমরা আমাদের পবিত্র আরাকান ছেড়ে দিয়ে কেন পাহাড়ে ঝুপড়িতে জীবন কাটাব? আমরা আমাদের মাটির টানে, জন্মভূমির টানে মিয়ানমারের আরাকানে ফিরতে চাই।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর