সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জে ওয়াশ ব্লক নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • সময় কাল : মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার মাছুয়াকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, রড ও খোয়া ব্যবহার করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন, ঠিকাদার আসলাম পারভেজ, ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুম মনির, সভাপতি মো. আব্দুস সালাম মাস্টারের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতিবাজদের অনিয়মের অভিযোগেরর বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষর দিয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। অনিয়মের কারনে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের মাছুয়াকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি দ্বিতল ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। আসলাম পারভেজ নামে এক ঠিকাদার এই বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ করছেন। ওই বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লকের দ্বিতল ছাদ নির্মাণ কাজ শেষের মধ্যে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন, ঠিকাদার আসলাম পারভেজ, ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুম মনির, সভাপতি মো. আব্দুস সালাম মাস্টার ম্যানিজিং কমিটির অন্য সদস্যদের বাদ দিয়ে তাদের মনমতো নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাছুয়াকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক কাজের তদারকীর দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুম মনির, প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন ও কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম মাস্টারের সহযোগিতায় ঠিকাদার আসলাম পারভেজ ওয়াস ব্লক নির্মান কাজে নিম্নমানের ইট, রড, বালু, খোয়া ও সাটার ব্যবহার করছে।
এতে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। পরে ঠিকাদারসহ এ কাজে জড়িত থাকা ব্যক্তিরা স্থানীয়দের সঠিক নিয়মেই কাজ চলবে বলে ১০ দিন নির্মান কাজ বন্ধ রাখেন। ১০ দিন কাজ বন্ধ থাকার পর শনিবার (২০ আগষ্ট) গোপনে ভোর বেলায় এলাকাবাসীদের না জানিয়ে তরিগরি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ছাদ ঢালাই কাজটি সম্পন্ন করে।
এতে স্থানীয়রা নিম্নমানের কাজ করে অর্থ আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করলেই বিস্তারিত বের হয়ে আসবে বলে এলাকাবাসীর দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এই স্কুলে পড়ে। ছেলে-মেয়েদের জন্য অনেক সরকারি বরাদ্দ আসে। কিন্তু ছেলে মেয়েরা কোন কিছু পাই না। প্রধান শিক্ষকের নিকট কোনো কিছু জানতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন।

মাছুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদার ওয়াস ব্লকের নির্মান কাজ হচ্ছে। এখানে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। এবিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের সাথে করা বলেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদার আসলাম পারভেজ বলেন, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ওয়াস ব্লকের নির্মান কাজ করতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু আমি কাজটি নিজেই করছি। এতে ওই গ্রামের কিছু ব্যক্তিরা এসকল অভিযোগ করছে। এছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।
নিয়ম মেনেই কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস সালাম মাস্টার জানান, বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতির লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে অভিযোগ করে তা আমার জানা নেই। সরকারী নিয়মেই কাজ হচ্ছে। যদি দুর্নীতি কেউ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুম মনির বলেন, ঠিকাদার ভালো কাজ করছেন। ঠিকাদারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তেমন কোনো সমস্যা নেই। হাজার হাজার ইটের মধ্যে কিছু তো খারাপ থাকবেই। তাছাড়া মিস্ত্রির অদক্ষতার কারণে কিছু ক্রটি হতে পারে।

এবিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আপেল মাহমুদ বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর সিরাজগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ইঞ্জিনিয়ার কে কাজের বিষয়ে খোজ খবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ হলে সেই কাজ বন্ধ  করে দেওয়া হবে

নিউজটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরও খবর
এই নিউজ পোর্টালের লেখা,ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা নিষেধ।
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102