• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
এবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে কাতারের আমির আসছেন সোমবার রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর বাংলাদেশে দূতাবাস খুলছে গ্রিস বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো চালের বস্তায় জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে মন্ত্রী-এমপির প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চর কনটেইনার টার্মিনাল ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ১০.৪৩ শতাংশ বঙ্গবাজারে দশতলা মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু শিগগিরই বেঁচে গেলেন শতাধিক যাত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর মুজিবনগর দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

সাশ্রয় ১৭ বিলিয়ন ডলার

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৪৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২

তৈরি পোশাকশিল্পে ব্যাক টু ব্যাক স্থানীয় এলসিতে ডলারের বিপরীতে টাকার ব্যবহার চালু হলে বছরে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবহার কমবে। কারণ পোশাক খাতের স্থানীয় এলসির জন্য ডলার ব্যবহার করতে হবে না। ফলে ব্যাংকগুলোকে বিপুল অঙ্কের ডলার ধরে রাখতে হবে না। তারা এটা অন্যান্য খাতে ব্যবহার করতে পারবে। এতে ব্যাংকে বিদ্যমান ডলার সংকট অনেকটাই কাটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে সব ধরনের স্থানীয় ঋণপত্র (এলসি) খোলা এবং অর্থ পরিশোধে মার্কিন ডলার ব্যবহার হচ্ছে।

নতুন ব্যবস্থাটি চালুর জন্য নিটওয়্যার রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এতে তারা স্থানীয় এলসিতে টাকার ব্যবহার চালুর অনুরোধ জানান। প্রস্তাবে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে। এতে বলা হয়েছে, সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিলে বর্তমান ডলার সংকট মোকাবিলা সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতের ব্যাক টু ব্যাক লোকাল এলসিতে টাকার ব্যবহার চালুর বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ব্যাংকগুলোয় খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে এটি বাস্তবায়নে সমস্যা আছে কি না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষামূলকভাবে চালু করতে পারে অথবা চালুর আগে সার্ভে করে দেখতে পারে। বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট নীতির সঙ্গে কোনো বিরোধ হয় কি না, তা দেখতে হবে। এরপর উদ্যোগটি ভালো হলে নিঃসন্দেহে বাস্তবায়ন করা উচিত। কারণ এ মুহূর্তে সর্বত্র ডলার সংকট চলছে।

জানা যায়, মোট রপ্তানি আয়ের ৫২ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক (নিট এবং ওভেন) খাত থেকে। এই রপ্তানির বিপরীতে কাঁচামাল (বোতাম, সুতা, হ্যাংগার, ডাইং, কাপড়) আমদানির জন্য এলসি খুলতে হয়। একে ব্যাক টু ব্যাক এলসি বলা হয়। নিটওয়্যারে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ হয় ব্যাক টু ব্যাক এলসি। আর মোট ব্যাক টু ব্যাক এলসির ৮০ শতাংশই কেনাকাটা করতে হয় দেশের ভেতর থেকে।

পাশাপাশি ওভেনের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই ব্যাক টু ব্যাক এলসি। আর মোট ব্যাক টু ব্যাক এলসির ১৫ শতাংশই হয় স্থানীয় এলসি। ফলে নিটওয়্যার এবং ওভেনের ক্ষেত্রে স্থানীয় এলসি খোলা ও মূল্য পরিশোধ উভয় হচ্ছে ডলারে। যেহেতু দেশের ভেতর স্থানীয় এলসি খোলা হয়, এজন্য ডলারের বিপরীতে টাকা ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে বিকেএমইএ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি ব্যাংকের ভেতরের অপারেশনাল কার্যক্রম। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দেখবেন। এ ধরনের কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে বাস্তবায়নে নির্দেশনা জারি করাই যথেষ্ট। বিষয়টি নিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ পর্যন্ত আসতে হবে না। এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিষয় নয়।

যেভারে ডলার সাশ্রয় হবে : বর্তমান প্রতিমাসে ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের নিটওয়্যার বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এর বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক এলসির হার প্রায় ৭৫ শতাংশ বা ১৫০ কোটি ডলার। আর মোট ব্যাক টু ব্যাক এলসির ৮০ শতাংশই দেশ থেকে কেনা হয়। ফলে এসব পণ্য সংগ্রহে স্থানীয় এলসি খুলতে হয় ডলারে। ফলে প্রতিমাসে ১২০ কোটি ডলারের পণ্য স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করতে এলসি খুলতে হচ্ছে নিট খাতে। এজন্য বছরে ডলারের প্রয়োজন হচ্ছে ১৪৪০ কোটি বা ১৪ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।

অপরদিকে প্রতিমাসে ওভেন পোশাক রপ্তানি হচ্ছে ১৫০ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে ৮০ শতাংশ ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতে হয়। ওই হিসাবে এর অঙ্ক ১২০ কোটি ডলার। মোট ব্যাক টু ব্যাক এলসির গড়ে ১৫ শতাংশ পণ্য দেশ থেকে ক্রয় সম্ভব হয়। ওই হিসাবে প্রতিমাসে স্থানীয় এলসি খুলতে হয় ১৮ কোটি ডলারের। বছরে প্রয়োজন হয় ২১৬ কোটি ডলার বা ২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন। এই নিটওয়্যার এবং ওভেন খাত মিলে বছরে স্থানীয় এলসিতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।

স্থানীয় এলসি টাকায় খোলার বিকেএমইএ-এর প্রস্তাব গভর্নরকে : স্থানীয় ঋণপত্র (এলসি) খোলা এবং মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের পরিবর্তে বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধের সুযোগ চেয়ে গত ৬ নভেম্বর বিকেএমইএ-এর পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে।

সেখানে বলা হয়, বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে বিশ্বে ডলার সংকট চলছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এলসি খোলা ও মূল্য পরিশোধে ডলারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রপ্তানিকারকরা। অপরদিকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রপ্তানিকারকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেখানে আরও বলা হয়, আপনি (গভর্নর) নিশ্চয় অবগতি আছেন নিট খাতের ৮০ শতাংশ কাঁচামাল দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

স্থানীয় পর্যায়ে ঋণপত্র খোলা এবং এর মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের পরিবর্তে বাংলাদেশি টাকা ব্যবহার হলে বর্তমান ডলারের সংকট মোকাবিলা কিছুটা হলেও সহজ হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, এ প্রক্রিয়া চালু হলে ডলারপ্রতি সাত থেকে আট টাকার পার্থক্যের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা থেকে পরিত্রাণ মিলবে।

জানতে চাইলে বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অর্থনীতি খাতে এখন বিশ্বসহ বাংলাদেশে একটি অসনীয় সময় চলছে। এই সময়ে স্থানীয় এলসিগুলো ডলারের বিপরীতে টাকায় করা যেতে পারে। এটি আপাতত তিন মাসের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমতি দিতে পারে।

প্রয়োজনে তিন মাস পর পরিস্থিতি বুঝে এ সিদ্ধান্ত তুলে নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সুবিধা হবে বর্তমান ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট কেটে যাবে। কারণ, নতুন নির্দেশনা দিলে ব্যাংকগুলোকে পোশাক খাতের স্থানীয় এলসির জন্য ডলার ব্যবহার করতে হবে না।

বিজিএমইএ-এর সাবেক সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা যে মূল্যে ডলার কিনে এলসি খুলছি, লোকাল এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য একই থাকতে হবে। না হলে রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে স্থানীয় এলসিগুলো টাকায় নেওয়া হলে ব্যাংকে ডলার সংকট কমবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর