সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র রাশিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় এক নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সলঙ্গা থানার লাঙ্গলমোড়া গ্রামের আবুল কালাম (৩৩) ও ফরিদুল ইসলাম (৩৪)। গোপিনাথপুর গ্রামের সুখী খাতুন (৪৮) ও পশ্চিম গাড়াদহ গ্রামের হাসেন নবী (৩০)। এর আগে জাহিদুল ও আব্দুল লতিফ নামে আরও দুই যুবককে আটক করে পিবিআই।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, গত ১৯ মে সকালে স্কুলছাত্র রাশিদুল ইসলাম তার বড় ভাইয়ের ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান নিয়ে রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর বাজারে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় তার বড় ভাই তরিকুল ইসলাম রায়গঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
২৪ মে দুপুরে সলঙ্গা থানার ইছলাদিঘর গ্রামে একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে রাশিদুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহতের ভাই মামলা দায়ের করেন। এই মামলাটি পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই টিম ছায়া তদন্ত করতে থাকে। মামলার তদন্ত চলাকালে পিবিআই সদস্যরা জাহিদুল ও আব্দুল লতিফ নামে দুই যুবককে আটক করে এবং তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অটোভ্যান উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে এই মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। তদন্তকালে ৩০ আগস্ট নুরুন হাসেন নবী নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিন আবুল কালাম ও ফরিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্কুলছাত্র রাশিদুল ইসলাম হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার চকভরিয়া গ্রাম থেকে স্কুলছাত্রের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার ও ১ সেপ্টেম্বর কথিত প্রেমিকা সুখী খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, তারা সংঘবদ্ধ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে যাত্রীবেশে অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক ভাড়া করে সুবিধাজনক স্থানে চালককে হত্যা করে ছিনতাই করে নিয়ে যান। গত ১৮ মে গ্রেপ্তারকৃতরা ভূইয়াগাতী বাজারে চায়ের দোকানে বসে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক স্কুলছাত্র রাশিদুল ইসলামকে হত্যা করে সলঙ্গা থানার ইছলাদিঘর গ্রামে একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর তাঁর মরদেহ রেখে অটোভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান।