• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারপিট আ’লীগ নেতা আরাফাতকে গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন সলঙ্গা থানা যুবলীগের সভাপতি পদে সিভি জমা দিলেন রিয়াদুুল ইসলাম ফরিদ ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে সিলেট ও কুষ্টিয়ার সেই দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস ঢাকার পয়ঃবর্জ্য ও গ্যাস লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ আমানতের মুনাফার ওপর কর দিতে হবে না চলছে কয়লা খালাস, জাহাজেই ফিরবেন সব নাবিক দুই মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার

রেমিটেন্সে বিশেষ সুবিধা

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৭২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২

বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস রেমিটেন্স বৈধপথে পাঠালে আরও ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন প্রবাসীরা। এখন রেমিটেন্সের ওপর ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। বর্তমান বাস্তবতায় এটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এ কারণে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের মাধ্যমে একটি প্রস্তাবনা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এতে প্রবাসীর সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে কোটা এবং সরকারি চাকরি প্রাপ্তিতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। প্রবাসীদের জন্য বাড়ানো হবে বিমা সুবিধা, এমনকি বিনিয়োগে বিশেষ কর ছাড়ের সুযোগ পাবেন তারা। দেশের যে কোনো সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে প্রবাসীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়া বর্তমানে রেমিটেন্সের ওপর বিদ্যমান প্রণোদনাও আগামী অর্থবছরে বাড়ানোর মতো কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।

অর্থাৎ প্রবাসীদের দিকে এবার সুনজর দেয়া হচ্ছে। মূলত হু-ি নয়, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আনতেই এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এসব উদ্যোগের ফলে রেমিটেন্স যোদ্ধা খ্যাত প্রবাসীরা সম্মানিত হবেন এবং ডলার সংকট কেটে রিজার্ভ শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ ও বাধাবিঘ্ন মোকাবিলা করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠান। কিন্তু সরকারের লক্ষ্য বছরে ২৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আহরণ। চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো প্রবাসী আয় কমে এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ (প্রায় ১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা সেই কঠোর পরিশ্রমী প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিদেশ থেকে আসার পথে বিমানবন্দরে নামার পর থেকে শুরু হয় তাদের ভোগান্তি। তারা নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ঘরবাড়ি, জমিজমা বেদখল থেকে শুরু করে নানা ঝক্কিঝামেলায় পড়তে হয় তাদের।

তবে প্রত্যেক প্রবাসীকে যদি বিমানবন্দর থেকে শুরু করে যে কোনো জায়গায় অগ্রাধিকার দেয়া হয়, তাহলে বৈধপথে রেমিটেন্স আরও বাড়বে। সরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং এক প্রকার অবহেলার চোখে দেখার কারণে প্রবাসীরা কাক্সিক্ষত মর্যাদা ও সম্মান পাচ্ছেন না। ফলে সরকারি উদ্যোগে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর উদ্যোগ থাকলেও বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স হুণ্ডি হয়ে আসছে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে দেশ।

বর্তমান বাস্তবতায় প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি ডলারের বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রণোদনা নিশ্চিত করা হলে রেমিটেন্স আহরণ বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। অন্যদিকে ডলার সংকটের এই মুহূর্তে রেমিটেন্স কমায় সব মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে সেই রেমিটেন্স বৈধপথে আনতে আরও আকর্ষণীয় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি জানান, ডলার সংকট দূর করতে বেশকিছু উদ্যোগ সরকারের রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেমিটেন্স বাড়ানো। এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে। তাদের (প্রবাসী) সন্তানরা দেশের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি এবং সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধা পাবেন। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিক্যাল কলেজসমূহ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির ক্ষেত্রেও তাদের কোটা থাকবে। চিকিৎসায় অগ্রাধিকার পাবেন। এভাবে আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পদক্ষেপ থাকবে। তিনি বলেন, সব ধরনের সেবার পরিমাণ বাড়িয়ে প্রবাসীদের মন জয় করা হবে।

এদিকে অর্থমন্ত্রী এই ঘোষণা দেয়ার পরই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারে একটি প্রস্তাবনা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবনাটি তৈরি হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর এবং অধিদপ্তরগুলোতে পাঠিয়ে দেবে অর্থ বিভাগ। এই প্রস্তাবনা অনুসরণ করে পববর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। দেশে জীবনযাত্রার মান, কাঠামোগত নির্মাণ, আবাসন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখে রেমিটেন্স। দেশের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী তাদের পরিবারের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত টাকা পাঠিয়ে থাকেন।

জানা গেছে, প্রবাসী কর্মীর বিমা পরিকল্পনা থেকে প্রতিবছর বড় মুনাফা করছে জীবন বিমা কর্পোরেশন। তাই রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়াচ্ছে সরকার। ডিসেম্বর মাস থেকে সরকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের আরও বেশি সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে একটি নতুন বিমা প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা করছে। নতুন বিমা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা কর্পোরেশন।

এ প্রকল্পের আওতায় থাকা একজন প্রবাসী সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিমার অঙ্ক পাবেন, যা আগে ছিল ৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি প্রবাসী কর্মী বিমার মেয়াদ বর্তমানের দুই বছর থেকে বাড়িয়ে করা হবে পাঁচ বছর। তবে কমানো হবে প্রিমিয়াম। এর অর্থ, এই পাঁচ বছর সময়ের মধ্যে এ বিমার আওতায় থাকা কোনো প্রবাসী বাংলাদেশীর মৃত্যু, আহত কিংবা অঙ্গহানি হলে বিমা সহায়তা পাবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের জন্য বিমা র আওতা ও সুবিধা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এর আগে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশগামী বাংলাদেশীদের বিমা সুবিধায় আনার নির্দেশনা দেন। ২০১৯ সালে তিনি প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিমা স্কিমের উদ্বোধন করেন।

এরপর প্রবাসী কর্মীদের ঝুঁকি কমানো ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্যতামূলকভাবে বিমা সুবিধা চালু করে সরকার। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৬-৭ লাখ মানুষ বিভিন্ন দেশে যায়। এসব প্রবাসী বছরে গড়ে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ১ জুলাই শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের ২৮ দিনে গড়ে প্রতিদিন ৭ কোটি ডলার করে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রপ্তানি খাতের পরই সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিটেন্স।

বিশ্বব্যাংকের মতে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, স্কুল-মাদ্রাসা, মসজিদ, হাসপাতাল স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এ অর্থ ব্যয় হয়। এছাড়া রেমিটেন্স আয়ের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয় দৈনন্দিন খরচের খাতে। এতে ওই পরিবারগুলোর দারিদ্র্য দূর হচ্ছে।

এছাড়া ২০২১-২০২২ অর্থবছরের শুরুতে প্রবাসী আয় কিছুটা হ্রাস পেতে শুরু করায় বৈধপথে প্রবাসী আয় পাঠানোয় অধিকতর উৎসাহ দিতে সরকার প্রণোদনার হার ০.৫ শতাংশ বাড়িয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২.৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। প্রবাসীরা এতে খুশি হয়েছেন। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন রেমিটেন্সের একটি বড় অংশ হুণ্ডি হয়ে আসছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর