প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল যদি আবার সরকার গঠন করতে পারে তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে প্রতিটি গ্রামকে একটি জনপদ এবং দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত করবে। বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজীর (পিরোজপুর-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮: সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ’ যা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে ‘২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ’ এবং ‘নিরাপদ ব-দ্বীপ’ গড়ে তোলার পরিকল্পনার রূপরেখা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নত বাংলাদেশের যাত্রার প্রথম ধাপ হিসাবে দেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে যেখানে মাথাপিছু গড় আয় পাঁচ হাজার ৯০৬ ডলারের বেশি হবে এবং বাংলাদেশ ২০৪১ সালে মাথাপিছু ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি আয়সহ একটি উন্নত দেশ হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭.২৫ শতাংশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৫ সালে এই হার ৮.৫১, ২০৩১ সালে ৯.০ এবং ২০৪১ সালে ৯.৯-এ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলাজাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
এছাড়া রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে পরিকল্পনাগুলো এখন বিবেচনাধীন রয়েছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে ভিশন-২০৪১-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১, স্মার্ট ডেল্টা তৈরির জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। (২০২৬-২০৩০), দশম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০৩১-২০৩৫) এবং ১১তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০৩৬-২০৪০)।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রচারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো হবে। ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা হবে। সড়ক, সমুদ্র, রেল ও বিমান যোগাযোগের জন্য গৃহীত সকল প্রকল্প সম্পন্ন করা হবে।
এছাড়া ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের ওপর জোর দিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্যের জন্য নতুন বিদেশি বাজার খোঁজার মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইসের উৎপাদন এবং ডিভাইসের নিজস্ব বাজার সম্প্রসারণ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষের মৌলিক চাহিদা- বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সব মানুষের সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নত করা হবে।
এছাড়া প্রতিটি গ্রামকে জনপদে রূপান্তর করে একটি উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে যথাসময়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে।