• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারপিট আ’লীগ নেতা আরাফাতকে গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন সলঙ্গা থানা যুবলীগের সভাপতি পদে সিভি জমা দিলেন রিয়াদুুল ইসলাম ফরিদ ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে সিলেট ও কুষ্টিয়ার সেই দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস ঢাকার পয়ঃবর্জ্য ও গ্যাস লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ আমানতের মুনাফার ওপর কর দিতে হবে না চলছে কয়লা খালাস, জাহাজেই ফিরবেন সব নাবিক দুই মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার

জ্বালানি তেলের দাম তিন মাস পর পর সমন্বয়ের চিন্তা

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৩৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২

জ্বালানি তেলে ভর্তুকি প্রদান থেকে সরে এসে আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারে বেচাকেনা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রতি তিন মাস পর দেশের বাজারে ডিজেল, অকটেন, পেট্রোলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।

গত সপ্তাহে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের নতুন পদ্ধতি নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। বর্তমানে দেশে যে পদ্ধতিতে এলপিজির (লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে অনেকটা সে পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের মূল্যহার নির্ধারণে একটি মডেল বা কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। তবে এলপিজির মূল্যহার প্রতি মাসে নির্ধারণ করা হলেও জ্বালানি তেলের দাম তিন মাস পরপর নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, তেলের দাম নির্ধারণে নতুন উপায় নিয়ে আমরা কাজ করছি। বর্তমানে এলপিজির দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করা হচ্ছে। তেলের দামও এভাবে সমন্বয় করা যায় কি না, সে চেষ্টা করছি। সরকার জ্বালানি তেলে আর ভর্তুকি দিতে চায় না।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) প্রতি মাসে এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করছে। শুনানির মাধ্যমে আমদানিকারকদের খরচ ও কমিশন চূড়ান্ত করা হয়। এখন প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দুই উপাদান প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যতটুকু ওঠানামা করে ততটুকুর সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে যে মাসে দাম বাড়ে বা কমে তার পরের মাসে দেশে এ গ্যাসের দাম বাড়ে বা কমে।

ডিজেল পেট্রোলের ক্ষেত্রেও এমন পদ্ধতি অনুসরণের কথা ভাবা হচ্ছে। পরিচালন খরচ, পরিবহন খরচ ও আমদানি ব্যয় আলাদা করা হবে। পরিচালন ও পরিবহন খরচ অপরিবর্তিত থাকবে বা দীর্ঘমেয়াদি হবে। আর প্রতি তিন মাস পর আন্তর্জাতিক বাজারের দরের সঙ্গে দেশের জ্বালানি তেলের বাজার দর নির্ধারণ করা হবে। বিইআরসি যাতে আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজটি করতে পারে সে জন্য ঝুলে থাকা বিইআরসি প্রবিধানমালার সংশোধনীসহ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে। বিইআরসি আইনের আলোকে ২০১২ সালে প্রবিধানমালার খসড়া করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও তা এখনো অনুমোদিত হয়নি। ঝুলে থাকা প্রবিধানমালায় প্রয়োজনে পরিমার্জন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এতদিন আমাদের অর্থ ছিল, আমরা ভর্তুকি দিয়েছি। কিন্তু করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যে মন্দা দেখা দিয়েছে তাতে আমরাও আক্রান্ত। সুতরাং বিদ্যুৎ এবং জ্বালানিতে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে তা বেশিদিন দেওয়া সম্ভব হবে না।

এদিকে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সাত বছরের বেশি সময় ধরে সরকার জ্বালানি তেলে কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। বরং রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিপুল পরিমাণ মুনাফা করেছে। পাশাপাশি সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেয়েছে। এখন হয়তো প্রতি মাসে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। কিন্তু সুশাসন ও দুর্নীতি দূর করা গেলে এ লোকসান হতো না। তারা আরো বলেন, জ্বালানি পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কর-মূসক আদায় করা হচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ টাকার মধ্যে ৩৪ টাকাই কর নেওয়া হচ্ছে। জ্বালানি তেলে সরকার যে পরিমাণ ভর্তুকি আগে দিত কর-মূসক বাবদ তার চেয়ে বেশি আদায় করেছে। আবার বর্তমানেও যে হারে ও পরিমাণে কর-মূসক আদায় করছে ভর্তুকি দিতে হলেও তা আদায়কৃত কর-মূসকের চেয়ে কম হবে।

বিদ্যমান পদ্ধতিতে তেলের দাম বেড়ে গেলে ভ্যাট-ট্যাক্সের পরিমাণও বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে দামের পরিবর্তে পণ্যের পরিমাপের ওপর কর-মূসক নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে আসছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেলে যেন সে হারে কর-মূসকের পরিমাণও না বাড়ে নতুন মূল্য কাঠামোতে তা নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব রয়েছে।

বর্তমানে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। একক পাইকারি বিক্রেতা হচ্ছে বিপিসি। তারা নিজেরা আমদানি করছে পাশাপাশি দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে পাওয়া উপজাত (কনডেনসেট) থেকে পাওয়া পেট্রোল, অকটেন বিতরণ কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার মাধ্যমে বাজারজাত করছে। বিতরণ কোম্পানিগুলো নিজেদের ডিলারের মাধ্যমে সারা দেশে সরবরাহ করে থাকে।

বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে প্রায় ৬৩ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ জ্বালানি ব্যবহৃত হয় পরিবহন-যোগাযোগ খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ তেল খরচ হয় কৃষিতে। বিদ্যুতে ১০ দশমিক ৩৫ এবং শিল্প খাতে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যবহৃত হয়। বাসাবাড়িতে ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খাতওয়ারি তেলের ব্যবহারের হার কমবেশি এমনই। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর তেলের ব্যবহার-বিক্রি প্রায় ১০ শতাংশ বাড়ে। তবে করোনার প্রভাবে গত দুই বছরে সে হারে বাড়েনি। বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, গত দুই বছরে তেলের ব্যবহার ২০২০-২১ অর্থ বছরের চেয়ে গড়ে ৫-৬ শতাংশ বেড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর