• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন যুদ্ধ কোনো সমাধান আনতে পারে না সলঙ্গা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে সিভি জমা দিলেন সোহেল রানা এভিয়েশন শিল্পে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য ৩ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমতে পারবে না বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মে থেকেই অভিযান আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করতে চায় ভারত মডেল ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ কৃষকের মধ্যে সাড়া ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত সুরক্ষিত থাকবে: বাংলাদেশ ব্যাংক হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির আইনের আওতায় আসবে সব ধরনের অনলাইন সেবা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা সলঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারপিট আ’লীগ নেতা আরাফাতকে গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন সলঙ্গা থানা যুবলীগের সভাপতি পদে সিভি জমা দিলেন রিয়াদুুল ইসলাম ফরিদ ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে সিলেট ও কুষ্টিয়ার সেই দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস ঢাকার পয়ঃবর্জ্য ও গ্যাস লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ আমানতের মুনাফার ওপর কর দিতে হবে না

উৎপাদন থেকে বিপণন সর্বস্তরে ডিজিটাইজেশন

সিরাজগঞ্জ টাইমস / ৪৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২

দেশের কৃষক উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। অনেক সময় তারা উৎপাদন খরচের চেয়েও কমমূল্যে ফসল বিক্রি করেন। অন্যদিকে গুদামের অভাবে ফসল সংরক্ষণ করা যায় না। সঠিক উপায়ের সংরক্ষণ না করায় পণ্যের গুণগতমান ঠিক থাকে না। দেশের কোন অঞ্চলে কোন ফসল সংরক্ষণ করা হয়েছে তার কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ নেই মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। ফলে কৃষক দিন দিন পেশায় আগ্রহ হারাচ্ছে। অপর দিকে তথ্য অজানা থাকায় উচ্চমূল্য কৃষিপণ্য ক্রয় করছে ক্রেতারা। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে তথ্য ঘাটতির সুযোগ নিয়ে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা।

বিষয়গুলো আমলে নিয়ে কৃষি বিপণন নীতিমালা-২০২২ প্রণয়ন করছে সরকার। এতে পণ্যের গুণগতমান, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন, কৃষি পেশায় শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের সম্পৃক্ত করা এবং গ্রাম-শহরের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার পদক্ষেপের কথা রয়েছে। ই-এগ্রিকালচার, ই-বিপণন এবং ই-এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করে বাজারব্যবস্থায় আধুনিকায়নের কথা বলা হয়েছে। কৃষিকে লাভজনক পেশায় রূপ দেওয়া, এ খাতে উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ভোক্তা স্বার্থ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। খসড়া নীতিমালার ওপর ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অংশীজনদের মতামত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, ‘খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য পাঠিয়েছি। আশা করছি অনুমোদনে সময় লাগবে না। নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে কৃষক, ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।’

নীতিমালায় বলা হয়, ডিজিটালি বাজার কাঠামো, প্যাকেজিং হাউজ, হিমাগার, সংরক্ষণাগার, প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র, অনলইন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাতকরণ, ব্র্যান্ডিং, পরিবহণ, রপ্তানি এবং অনলাইন মার্কেটিং হবে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনাশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে। উৎপাদন, মজুদ, পরিবহণ, মধ্যস্বত্বভোগী, ক্রেতা-বিক্রেতা, ভোক্তা, পণ্যের গুণগতমান, প্রক্রিয়াকরণসহ সব তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ তৈরি করবে কৃষি বিভাগ। কৃষিপণ্যের গ্রেডিং, সটিং, প্যাকেজিং, লেবেলিংয়ের মাদ্যমে বাজারজাতের সুফল বেতার, টেলিভিশন, ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, পত্রিকা, বুলেটিন, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হবে। বাজার দর ওঠা-নামা, মজুত পরিস্থিতি, চাহিদা ও সরবরাহ সম্পর্কে কৃষক-ভোক্তা, ব্যবসায়ীদের ডিজিটালি তথ্য দেবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। অনলাইনভিত্তিক কৃষি বিপণন কার্যক্রম গুণগতমান, পেমেন্ট, সরবরাহের সময়, চুক্তি অনুযায়ী ডেলিভারি হয় কিনা তা তদারকি করা হবে। নিরাপদ কৃষিপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে কোনো ক্রমেই আপস করা হবে না। ক্ষতিকর কোনো কৃষিপণ্য উৎপাদন করা যাবে না। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নীতিমালা রিভিউ করা হবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়, অনেক সময় উৎপাদক বাজার খুঁজে পায় না। সময়মতো কাক্সিক্ষত বাজারে পণ্য পৌঁছাতে পারে না। ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। এ অবস্থার উন্নয়নে বাজার খুঁজে পেতে ডিজিটালি তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে কোন পণ্য কোন জেলায় পাওয়া যায় তা অনলাইনে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রপ্তানি বাড়াতে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি, স্মারক ও সম্পর্ক জোরদার করা হবে। হাটবাজার, রেলস্টেশন, ফেরিঘাট, লঞ্চঘাটসহ অন্যান্য উন্মুক্ত স্থানে কৃষিপণ্যের আধুনিক বিপণন বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় সচেতনতা তৈরি করা হবে। কমিউনিটিভিত্তিক কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রচার প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়, বিপণন অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জিং কাজ। একই সঙ্গে উৎপাদক ও ভোক্তার সন্তুষ্টি অর্জন খুবই দুরূহ কাজ।

এ বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান বিনিময় ও কারিগরি জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই ফসল সংগ্রহ পদ্ধতি, সটিং, গ্রেডিং, সংরক্ষণ, প্যাকেজিং, পরিবহণে গুণগতমান বজায় রাখার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিপণনের ওপর স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্লোমা, মাস্টার্স ও পিএইডি ডিগ্রির ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও ইন্ডাস্ট্রিতে শর্ট কোর্সে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। কৃষি বিপণনের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানো হবে।

খসড়ায় বলা হয়, উৎপাদক, বিক্রেতা এবং ভোক্তার কল্যাণে তথ্য ও প্রযুক্তি সমন্বিত সাপ্লাই চেইন থাকা অপিরহার্য। সাপ্লাই চেইন বাজার সম্প্রসারণের পথ সুগম করে। সুশৃঙ্খল ও পরিকল্পিত সরবরাহ চ্যানেল নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার চাচ্ছে এই চেইনের বিভিন্ন পর্যায়ে অংশীজনদের জন্য ডিজিটাল অবকাঠামো থাকুক। এ অবকাঠমো ব্যবহার করে তারা যেন সরবরাহ তৎপরতার ওপর নজদারি করতে পারে। আর সরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ চেইনের কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করবে।

নীতিমালায় বলা হয়, নারী উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে উৎপাদন, সরবরাহ বিপণনের সর্বস্তরে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তারা ই-এগ্রিকালচার মার্কেটিং ও ই-শপিং মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা পাবে। কৃষি ব্যবসায় যুবক ও যুবতীদের সম্পৃক্ত করে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট কৃষিশিল্প স্থাপনে যুবকদের উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা, ঋণ ও প্রণোদনা, ই-এগ্রিমার্কেটিংয়ের মাধ্যম যুবকদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। সার ও বীজ, নার্সারি ব্যবসা, ফুল ব্যবসা, মৎস্য চাষ, কমিউনিটি/সমিতি/দলভিত্তিক ব্যবসায় যুবকদের উৎসাহিত করা হবে।

নীতিমালায় বলা হয়, ধান, পাট, মাছ, আলুসহ বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন সেরাদের সেরা। বিশ্বের অনেক দেশেই উৎপাদিত শাকসবজি ও ফলমূল রপ্তানি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে না এলে বাজার সম্প্রসারণ ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে না। সে কারণে অঞ্চলভেদে বিভিন্ন ধরনের ফলফুল শাকসবজি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করা হবে। এতে অগ্রাধিকার পাবে শিক্ষিত যুবকরা। দেশের যে স্থানে ফুল উৎপাদন হয় ওই এলাকায় ফুল সংরক্ষণ এবং ফুল থেকে প্রস্তুত বিভিন্ন প্রসাধনী, ওষুধ, শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তা তৈরিতে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে। সরাসরি কৃষক ও কৃষি ব্যবসায়ীদের উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াজাতকৃত কৃষিপণ্য ব্র্যান্ডিংয়ে সহযোগিতা দেবে সরকার।

খসড়ায় বলা হয়, দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। কৃষিপণ্যের বাজাতকরণের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান এবং আপৎকালীন মজুত নিশ্চিত করা জরুরি। মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বছরব্যাপী চাহিদা নির্ধারণ, কৃষি উপকরণের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, ভর্তুকির পরিমাণ কমানো, কৃষিপণ্যের দাম কমাতে কৃষি বিপণন আইন-২০১৮ এবং কৃষিবিপণন বিধিমালা ২০২১ বাস্তবায়ন, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি ও অবৈধ মজুতদারি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একচেটিয়া বাজার (মনোপলি) রোধে নতুন নতুন কৃষি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়, বিদেশে কৃষিপণ্যের চাহিদা সম্পর্কিত মার্কেট ইনটেলিজেন্সি, বাজার সম্প্রসারণ, উচ্চমূল্য প্রাপ্তির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে। পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে উৎপাদিত নিরাপদ কৃষি আন্তর্জাতিক বাজার অনুসন্ধান করা হবে। বিমান, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে গুণগত মান বজায় রেখে পণ্যপরিবহণে সহায়তা করা হবে। বাজার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে প্রয়োজনে রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর