হাসপাতালে চাকুরিরত অবস্থায় তরুণী আয়াকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, পেটের বাচ্চা নষ্ট এবং নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এক মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী।
অভিযুক্ত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পুর্নিমাগাতি ইউনিয়নের গোয়ালজানি (মওড়া) এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট মো. আহসান হাবিব।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সলঙ্গা থানার হাটিকমরুল গোলচত্বর এলাকায় পপুলার হাসপাতালে চাকুরিরত অবস্থায় আহসান হাবিবের সঙ্গে ভুক্তভোগী তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই তরুণী একই হাসপাতালে আয়া হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছিলেন। আহসান হাবিব বিয়ের আশ্বাস দিয়ে দিনের পর দিন ওই তরুণীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসছিলেন।
সম্পর্কের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী গর্ভবতী হয়ে গেলে ঔষধ খাইয়ে তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করেন আহসান হাবিব। এরপর ভুক্তভোগী তরুণী গত ৯ সেপ্টেম্বর হাবিবকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে আবারও জোরপূর্বক ধর্ষণের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তারিয়ে দেন।
এ বিষয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর উল্লাপাড়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নেওয়ায় ভুক্তভোগী তরুণী ১৪ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ আদালতে বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই বলেন, ছেলেটি মেয়েটির সাথে অনেক ক্লোজভাবে মেলামেশা করত। দেখতাম বিয়েও ঠিক হয়েছিল বলে জানতাম। তারপর ছেলেটি হঠাৎ করে পপুলার হাসপাতালে চাকরি ছেড়ে চলে যায়। পরে আরও শুনলাম ছেলেটি বিয়ে করেছে মেয়টি ছেলের বাড়িতে গেলে নাকি মারধর করে তারিয়ে দিয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, হাবিবের সাথে চাকরি করার সুবাদে পরিচয় হওয়ার পর থেকে আমাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। পরে প্রেমের সম্পর্ক হয়ে যায়। হাসপাতালে একা পেয়ে আমাকে জোরপূর্বক একাধিকবার বার ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে আমাকে ও আমার পরিবারকে বিয়ের আশ্বাস দেয়। আমি এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে গেলে আমাকে ঔষধ খাইয়ে গর্ভপাত করায়। আমি বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে আমাকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে আবারও ধর্ষণ করে এবং আমাকে মারধর করে হত্যার হুমকি দেয়। সে এখন অন্যত্র বিয়ে করেছে। আমি প্রতারক ও ধর্ষক হাবিবের বিচার চাই।
ভুক্তভোগী সেই তরুণীর বাবা বলেন, হাসপাতালে হাবিব একা পেয়ে আমার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে হাবিব আমার কাছে এসে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। দুই-তিন মাস অতিবাহিত হলেও হাবিব তালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার মেয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে ডেকে নিয়ে আবার ও ধর্ষণ করে এবং মারধর করে তারিয়ে দেয়। শুনলাম সে বিয়ে করেছে, আমরা লম্পট ও প্রতারক হাবিবের সঠিক বিচার দাবি করছি।
অভিযুক্ত হাবিবের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার দাদা রবি মেম্বর দেখছেন। আমি বাইরে থাকি আমি তেমন কিছু জানি না। আপনারা রবি মেম্বারের সাথে একটু যোগাযোগ করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাবিবের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।